বাংলার ভোর প্রতিবেদক:
নিরবেই চলে গেলেন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার বাতিঘর, একজন আদর্শবান লেখক সাংবাদিক, কলামিস্ট, শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক নিভৃতচারী মিজানুর রহমান মধু (৭৮)। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন।
নিভৃতচারী এই জ্ঞানপণ্ডিত বেশ কিছুদিন ধরে যশোর শহরের পুলিশ লাইন টালিখোলা এলাকায় নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন তাঁকে খুলনায় নেয়া হয়।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত চৌগাছা সরকারি শাহাদৎ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জন্মভিটা চৌগাছার পিতাম্বরপুর গ্রামে। সেখানে স্থানীয় ঈদগাহে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা ও এক পুত্র, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য ভক্ত-গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে শোখ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদ-সাংবাদিক-রাজনীতিক-পেশাজীবীসহ বিভিন্ন মহলের নেতৃবৃন্দ।
১৯৪৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চৌগাছা উপজেলাধীন পীতাম্বরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মিজানুর রহমান। তাঁর পিতা ডা. মোহর আলী, মাতা মোমেনা খাতুন। তিনি যশোর সম্মিলনী ইন্সটিটিউশন থেকে ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে মাধ্যমিক ও ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে ঝিনাইদহ কে.সি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে যশোর এম.এম কলেজে বাংলায় অনার্স নিয়ে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন।
সেখানে ছাত্র অবস্থায় ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে অনার্স ও ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে এম.এ পাস করেন। পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়েই করেন শিক্ষকতা। এর আগে তিনি বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপনা পরেন।
জ্ঞানতাপস মিজানুর রহমান জীবদ্দশায় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সমাজ, রাজনীতি ও মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণ বিষয়ে কলাম লেখার পাশাপাশি প্রকাশ করেছেন একাধি
ক গ্রন্থ। তার প্রকাশিত ‘কুশিক্ষা নয়, সুশিক্ষা চাই’ বইটি সমাজ সংস্কারে ও বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিকে, মরহুমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলার ভোর পরিবার। সম্পাদক সৈয়দ আবুল কালাম শামছুদ্দীন তার শোকবার্তায় বলেছেন, দেশ একজন নিবেদিতপ্রাণ সমাজসংস্কারককে হারালো। যিনি নিরবে শুধু দিয়েই গেছেন। তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।
উল্লেখ্য, মরহুম মিজানুর রহমান খান বাংলার ভোরের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দা নাজমুন্নাহার শশীর ননদাই এবং চৌগাছা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আতিউর রহমানের ছোট ভাই।

