বিবি প্রতিবেদক
গত কয়েক দিন ধরে যশোরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। উত্তরের হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের নিচে এসেছে। গতকাল সীমান্তবর্তী এই জেলাটিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন শীত আরও কয়েক দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা নেমে এসেছে ১০০ মিটারে। এছাড়া বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার। এতে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। শুক্রবার পর্যন্ত খুলনা বিভাগসহ দেশের পাঁচটি বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পর মেঘ ও কুয়াশা পরিষ্কার হয়ে গেলে দেখা মিলবে সূর্যের।
এদিকে, শীতে বেশি কষ্টে রয়েছেন নিম্ন আয়ের ও ছিন্নমূল মানুষরা। যশোর রেলস্টেশন ও ফুটপাতগুলোতে ছিন্নমূল মানুষকে কম্বল মুড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড়, হাত-পায়ের মোজা, টুপি, মাফলার, জ্যাকেটের চাহিদা বেড়েছে।
পথচারী মিজানুর বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরেই বেশ শীত অনুভূত হচ্ছে। আজ শীতের তীব্রতা একটু বেশি। হাত পা শীতল হয়ে গেছে। গরম কাপড়ের সঙ্গে হাত মোজা, পায়ের মোজা পরলেও স্বস্তি মিলছে না। শীতের কারণে আজ ছোট সন্তানদের স্কুলেও দেয়নি। নিজে পেটের তাগিদে বের হয়েছি। কাজ না করলে বাড়ির সবাই না খেয়ে থাকবে। শীত পড়লেও কষ্ট নিয়েই কাজে বের হতে হয়।’
রিকশাচালক আলী বলেন, ‘তিনটি শার্ট, দুটি প্যান্ট, মোজা পরেছি। সেই সঙ্গে মাফলার ও মাথায় টুপি দিয়ে কান মুখ ঢেকে রেখেছি। এরপরও শীতে কাবু হয়ে যাচ্ছি। খুব সকালে বের হয়েছি তেমন একটা ভাড়া খাটতে পারিনি। একটি ট্রিপ দিলে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। পেটের দায়ে এত শীতের মধ্যেও বের হতে হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাঈদ বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই শীতের তীব্রতা বেশি। মঙ্গলবার রোদের দেখা মেলায় শীত কিছুটা কম থাকলেও বুধবার আবার শীত জেঁকে বসেছে। সারাদিন সূর্যের দেখা নেই। শীতের তীব্রতার কারণে সন্তানদের স্কুলে পাঠাইনি। চাকরির কারণে বের হতে হচ্ছে।’
শীতের প্রকোপে রোগীর চাপ বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে। বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপও বেড়েছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ৭০-৮০ ভাগই শীতজনিত কারণে অসুস্থ। তাদের বেশির ভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। আবার শীতজনিত কারণে মারা গেলেও পরিসংখ্যান ওইভাবে করা সম্ভব হয় না। কারণ, শীতের কারণেই রোগীর অ্যাজমা সমস্যা বাড়ে, কাশি বাড়ে, জ্বর থেকে নিউমোনিয়া হয়। কিন্তু মারা গেলে এসব রোগই শনাক্ত করা হয়। তখন তা শীতজনিত কারণে বলা সম্ভব হয় না।’
এই বিষয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রিজিবুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া ৪৩ হাজার পিস কম্বল ইতোমধ্যে জেলার ৮ উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। বরাদ্দ পেলে আবার বিতরণ করা হবে। সরকারি কম্বল ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কম্বল বিতরণ করছে। তবে সেটা অনেক কম। তাই সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনকে শীতার্ত মানুষের মাঝে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
শিরোনাম:
- একই সঙ্গে দুই কলেজের অধ্যক্ষ জাহিদুলের নজিরবিহীন দুর্নীতি
- অভয়নগরকে হারিয়ে ফাইনালে কালীগঞ্জ
- অফিস সহকারী পদে হেলালের এমপিওভুক্তি নিয়ে লুকোচুরি
- শিক্ষার মান উন্নয়নে ভালো শিক্ষক দরকার
- উপশহর টিচার্স ট্রেনিং কলেজের শিক্ষা সফর অনুষ্ঠিত
- ‘বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্ম গড়তে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে’
- যশোরে নতুন আঙ্গিকে ব্রাদার্স ফার্নিচার শো রুম উদ্বোধন
- আলুর দাম লাগামহীন ভোক্তার নাভিশ্বাস