আব্দুল ওয়াহাব মুকুল
যশোরে আফিল ফার্ম সিন্ডিকেট ইচ্ছামত ডিমের দাম বৃদ্ধি করে চলেছে। যখন ক্ষুদ্র পুঁজির খামারিরা তাদের উৎপাদিত ডিম বাজারে আনেন তখন আবার ইচ্ছামত দাম কমায় আফিল ফার্ম সিন্ডিকেট। এতে করে ক্ষুদ্র খামারিরা আর্থিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। আর ভোক্তারা পড়ছেন বিপদে।
পোল্ট্রি ডিম খাতে বড় পুঁজির কারসাজির কাছে মার খাচ্ছে ক্ষুদ্র খামারিরা। আফিল ফার্ম সিন্ডিকেটের সাথে পাল্লা দিতে না পেরে ক্ষুদ্র খামারিরা অব্যাহত লোকসানে বন্ধ করে দিচ্ছেন তাদের খামার।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তদারকি সংস্থা অজ্ঞাত কারণে চুপ রয়েছে বলে ক্ষুদ্র খামার মালিকরা জানিয়েছেন।
গত জুলাই থেকে ৫ আগস্ট এর আগে আফিল ফার্ম সিন্ডিকেট যশোর শহরে ডিম বিক্রি করেছে প্রতি পিস ৮ থেকে ৯ টাকায়। হঠাৎ ৫ আগস্ট থেকে পর্যায়ক্রমে ১১টাকা থেকে সোয়া ১২ টাকায় বিক্রি করছে। যা খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা দরে। ক্ষুদ্র খামার মালিকরা বলছে, ঋণ নিয়ে পোল্ট্রি খামার করে বড় পুঁজির কুট চালের কাছে আমরা অধিকাংশ ক্ষুদ্র খামারি হার মেনেছি।
ক্ষুদ্র খামারিরা বলছে, শুধু ডিম নয় এ অঞ্চলের বড় খামারিরা বাচ্চা উৎপাদন করে মুরগি ব্রয়লার ও লেয়ার করছে। তারা ইচ্ছামত দাম বৃদ্ধি করে। আবার ইচ্ছামত দাম কমায়। ফলে তাদের সাথে পাল্লা দিতে পারে না ক্ষুদ্র খামারিরা। বাজার থেকে চড়া দামে বাচ্চা ক্রয় করে ব্রয়লার মাংস বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে আসল টাকা উসুল করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
যশোর জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে বলা হয়েছে, যশোরের ৮ উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ১৪৫ টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কেশবপুর উপজেলায় ২৭০টি এবং সবচেয়ে কম চৌগাছা উপজেলায় ৩৪টি। এছাড়া সদরে ১৯১, মণিরামপুরে ১৫৬, শার্শায় ১৫৪, বাঘারপাড়ায় ১৪৫, অভয়নগরে ৯০ ও ঝিকরগাছায় ৫৭টি মুরগির খামার রয়েছে। এসব খামারের সিংহভাগ মাংসের জন্য ব্রয়লার, সোনালী মুরগির চাষ করা হয়। তবে কয়েক বছরে ক্ষুদ্র খামারির সংখ্যা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
যশোরের মুরগির খামারের সার্বিক বিষয় তুলে ধরে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, যশোরে আফিল ফার্ম প্রতিদিন প্রায় ৪/৫ লাখ ডিম উৎপাদন করছে। প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার কেজি ব্রয়লার উৎপাদন করে থাকে। আফিল ফার্ম নিজেরা ডিম উৎপাদন, বাচ্চা তৈরি ও ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন করে থাকে। আফিল ফার্মের বড় পুঁজির কাছে ক্ষুদ্র পুঁজির খামারিরা পেরে উঠে না। একই সঙ্গে মুরগির বাচ্চা, ডিম ও ব্রয়লার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সিন্ডিকেট আছে। তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য ক্ষুদ্র খামারিদের চড়া মূল্যে বাচ্চা কিনতে হয়। এক কথায় বড় পুঁজির কাছে ছোট পুঁজির খামারিরা মার খাচ্ছে। একটানা লোকসানে থাকলে ক্ষুদ্র খামারিরা বন্ধ করে দেয় খামার। তিনি আরও বলেন, প্রাণি সম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে খামারিদের বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ দেয়া হয়। এর বাইরে তেমন কোন সহযোগিতার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে এই সকল সিন্ডিকেটের লাগাম না টানায় সাধারণ মানুষ দিনকে দিন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। তাই মুরগির ডিম বিপণনে নিয়ন্ত্রণহীন বাজারকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
শিরোনাম:
- আজ যশোরে আসছেন পানি সচিব
- ঘুষ দিয়েও চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন শ্রমিকদের
- কেশবপুর নিরাপদ সড়ক চাই’র দোয়া অনুষ্ঠিত
- ১৫ টাকার চালে ডিলারের ভাগ !
- রিয়াদ হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবিতে যবিপ্রবিতে মানববন্ধন
- দুর্গাপূজা উপলক্ষে তালায় মতবিনিময়
- কেশবপুরে প্রবাসী সাবেক শিক্ষার্থীর উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ
- যশোরে খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত