বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের চৌগাছা উপজেলার বল্লভপুর বাওড় লুট করতে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় একদল চিহ্নিত দুর্বৃত্ত। এসময় বিপুল পরিমাণ জাল ও মাছ জব্দ করা হয়। রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সমিতির সদস্যরা বলছেন, পুলিশের তৎপরতায় বাওড়ের মাছ লুট ওক্ষা পেয়েছে। বাওড়ের নিরাপত্তাকর্মীদের জিম্মি করে দুর্বৃত্তরা মাছ লুট শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসায় লুটকারীরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারক কুমার বিশ্বাস জানান, রোববার রাত পৌন ১২টার দিকে সশস্ত্র অবস্থায় বল্লভপুর গ্রামের নিমাই বিশ্বাসের ছেলে কার্তিক বিশ্বাস, মতলেব মন্ডলের ছেলে জিন্নাত মন্ডল, ফকির চাঁদের ছেলে আইজেল হক ও তাইজেল হক, রহিফুলের ছেলে আজাহার, মুনতাজের ছেলে মনিরুল, আবদুল খালেকের ছেলে শিপন, ফকিরচাঁদের ছেলে মাসুদ, নিমাই মল্লিকের ছেলে গহর আলী ও শহর আলী, হাসেম আলীর ছেলে সাবদার, ও মোস্ত’র ছেলে সুজনসহ ৩৫/৪০ জন বাওড়ে গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাদেরকে বাওড় ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেয়া হয়। নিরাপত্তাকর্মীরা বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিকভাবে চৌগাছা থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসআই সৌরভের নেতৃত্বে পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা জাল ও মাছ ফেলে পালিয়ে যায়। এ সময় বিপুল পরিমাণ মাছসহ জাল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চৌগাছা থানার এসআই সৌরভ জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্ত করেই মামলা রেকর্ড করা হবে।
বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারক কুমার বিশ্বাস জানান, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে ছয় বছর মেয়াদে ( ১৪৩১-১৪৩৬ বঙ্গাব্দ) চৌগাছার বল্লভপুর বাওড় জলমহালটি ইজারা নিয়ে চাষ করছে বল্লভপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড। এর আগে তিন বছর মেয়াদে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে সমিতি বাওড়ে মাছ চাষ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কিছু দুর্বৃত্ত জোরপূর্বক বাওড়টি দখলের পায়তারা করছে। গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরের দিনও দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় ওই চক্রটি। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে আমাদের হুমকি দেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী বিজয়ী হলে বাওড় দখল করে নিবে। তিনি বিজয়ী হওয়ার পর থেকে আমাদেরকে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছে সন্ত্রাসীরা। আমাদের ক্ষতি করতে পারে, এই আশংকায় গত ২০ জুন ২০২৪ তারিখে চৌগাছা থানায় ১০জনের নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। গত ২১জুন সকালে সমিতির সদস্য বাওড়ের মাছ শিকারের প্রস্তুতি নেয়।
এ সময় বল্লভপুর গ্রামের ফকির চাঁদের ছেলে আইজেল হক, মতলেব মন্ডলের ছেলে জিন্নাত মন্ডল, নিমাই বিশ^াসের ছেলে কার্তিক বিশ^াস, হাশেম আলী ছেলে সবদারের নেতৃত্বে ৪০/৫০জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হানা দেয়। তার হুংকার দেয় তাদেরকে কোটি টাকার চাঁদা পরিশোধ না করে বাওড়ে মাছ শিকারে নামলে হাত পা কেটে না হবে। এসময় অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করে। বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে চৌগাছা থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই সন্ত্রাসীরা প্রায় সাত লাখ টাকা মূল্যের জাল কেটে নষ্ট করে দেয়। একই সাথে সদস্যদের লাঞ্ছিত করে। বাধা দিলে জায়গায় হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। এ ঘটনায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ২১ জুন সন্ধ্যায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারক কুমার বিশ^াসকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেন জিন্নাত আলী। এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।