ছুটিপুর সংবাদদাতা
ভারত সীমান্তবর্তী যশোরের চৌগাছা উপজেলায় বারি-১ জাতের সবুজ মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে বাগানগুলোতে মাল্টা পরিপক্ব হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু হয়েছে। ভালো মানের হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন বাগান মালিকরা। বাগান মালিকদের দেয়া তথ্যমতে উপজেলায় চার কোটি টাকার মাল্টা বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে।
এ অবস্থায় সবুজ মাল্টার পাশাপাশি হলুদ মাল্টা এবং বারোমাসি থাই মাল্টার দিকে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ জানায়, চৌগাছা উপজেলার পৌরসভাসহ ১১ টি ইউনিয়নের চাষিরা বারি-১ জাতের সবুজ মাল্টা চাষাবাদ শুরু করে। কৃষি বলছে উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে লেবু ও সবুজ মাল্টার বাগান রয়েছে। যদিও চাষিরা বলছে বাস্তবে এর চেয়ে অনেক বেশি জমিতে মাল্টা বাগান রয়েছে। মাল্টা চাষে খরচ কম হওয়ায় উপজেলার পতিত জমিগুলোতে এখন সবুজ জাতের মাল্টা চাষ বাড়ছে। চাষিদের তথ্য মতে উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে মাল্টা বাগান রয়েছে। প্রতি কেজির বর্তমান বাজার দর ৬০ থেকে ১০০ টাকা। ১ হেক্টর জমির সবুজ মাল্টার বর্তমান বাজার দর প্রায় ৭ লাখ টাকা। সে হিসেবে উপজেলায় প্রায় ৩ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি হবে। কৃষকরা জানান, গত ২০১৫ সালের পর থেকে চৌগাছায় মাল্টা চাষাবাদ শুরু হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর চাষিরা ব্যাপক লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তারা। পাশাপাশি হলুদ মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা।
মাল্টা চাষি চৌগাছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ড. আব্দুস শুকুর বলেন, চাকরির পাশাপাশি এক একর জমিতে লেবু ও মাল্টা চাষ করেছেন। চারা রোপোণের তিন বছর পরে গাছে ফল আসতে শুরু করে। এ বছর বর্ষার কারণে ভালো ফলন হয়নি। তার পরেও তিনি ৬ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, সবুজ মাল্টায় সফলতার পরে তিনি হলুদ মাল্টা চাষ শুরু করেছেন। পাতিবিলা গ্রামের চাষি সুমন জানান তিনি ৬ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করে লাভবান হয়েছেন। তিনি এ বছরে ১০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। মাঠচাকলা গ্রামের আব্দুল্লাহ, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আরিফুর রহমান, নুরুজ্জামান জানায় মাল্টা চাষ করে অন্য ফসলের তুলনায় কয়েকগুন বেশি লাভবান হয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, মাল্টা বিদেশি ফল হলেও এটি এখন আমাদের দেশীয় ফলের সঙ্গে সংযোজন করা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে মাল্টা বিক্রি করে উপজেলার চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। বর্তমানে সবুজ মাল্টার পাশাপাশি বারি-৩ এবং বারোমাসি থাই মাল্টার চাষাবাদের জন্য তাদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হুসাইন জানান, মাল্টা লাভজনক ফসল হওয়ায় উপজেলার প্রতিটি গ্রামেই কম বেশি মাল্টা চাষ হচ্ছে। চলতি বছরে উপজেলায় যে পরিমাণ মাল্টা উৎপাদন হয়েছে তার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা।