বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের বাজারে শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহের ফলে অনেকটাই কমেছে সবজির দাম। কমছে চালের দামও। তবে একেবারেই উল্টো চিত্র মাছ, মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজারে। সব ধরনের মাছ ও মাংসের দাম স্থিতিশীল। ডাল, তেল, মসলার বাজারেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। বিক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহ থেকে বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। এতে প্রতিটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে। শুক্রবার যশোর শহরের বড়বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাজার, রেলস্টেশন বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
শহরের বেলগেট এলাকার বাসিন্দা আফজাল হোসেন। পেশায় তিনি একজন শ্রমিক। সবজি কিনতে এসেছিলেন রেল বাজারে। তিনি বলেন ‘কিছুদিন আগেও বাজারে বিভিন্ন সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও এখন সহনীয় পর্যায়ে এসেছে। বাজারে এখন প্রতি কেজি সবজির দাম ২০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে রয়েছে।
প্রকারভেদ অনুযায়ী বিভিন্ন সবজির দাম ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। শুক্রবার যশোরের বাজার ঘুরে এমন তথ্য মিলেছে।
গত সপ্তাহে যে ঢেড়স বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি সেটা এখন ২০-২৫ টাকা। কুমড়ো ৪০ টাকা থেকে কমে এখন ২০-২৫ টাকা। ৫০ টাকার পটল বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা কেজি। ঝিঙে, ধুন্দল ৫ টাকা কমে ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কাঁঠাল ১০ টাক কমে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে পুঁইশাকের দাম ছিল ৪০ টাকা কেজি। তা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকা। কাঁচকলার দাম ৪০-৫০ টাকা, বেগুন মানভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ২০ থেকে ২৫ টাকা কমে কাঁচা ঝাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রকার চালের দাম ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৬৪-৬৮ টাকা। বাসমতি চাল ৮০ থেকে ৮৪ টাকা। কাজল লতা ৬০ থেকে ৬২ টাকা।
চাল ব্যবসায়ী একে ট্রেডার্সের মালিক অসিম কুন্ডু জানান, এখন নতুন চাল উঠছে। রোজ সরবরাহ বাড়ছে। তাই দাম কিছুটা কম। তবে চাল মজুদদাররা মজুদ করা শুরু করলে দাম বাড়বে।
উত্তম ট্রেডার্সের মালিক উত্তম কুন্ডু জানান, এখন চালের ভরা মৌসুম। সরবরাহ বেশি থাকায় দাম কিছুটা কম। তবে কোরবানির পর থেকে চালের দাম বাড়তে পারে।
বিভিন্ন মুদি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকা লিটার যা অপরিবর্তিত রয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম থাকায় কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে এটি। সরিষা তেলের দাম মান ভেদে ১৯০ থেকে ২০৫ টাকা কেজি।
তবে মশলার বাজার গরম। ব্যবসায়ীরা আশংকা করছেন কোরবানির পূর্ব মুহূর্তে মশলার বাজার আরেক দফা চড়া হতে পারে।
মুদি ব্যবসায়ী বিপুল স্টোরের মালিক বিপুল রায় জানান, বর্তমানে ভালো মানের এলাচ ৫৫০০ থেকে ৬০০০ টাকা কেজি। অন্যান্য মশলা প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে পর্যায়ক্রমে। যা কোরবানি ঈদে আরো বেড়ে ভোগান্তিতে ফেলতে পারে ভোক্তাদের।
মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব রকম মুরগির দাম গত সপ্তাহ থেকে ২০ থেকে ৩০ টাকা কম। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০ টাকা। এখন সেটা ২০ টাকা কমে ১৮০ টাকা। লেয়ার মুরগি ১০ টাকা কমে এখন ৩২০। কক মুরগি ৩২০ টাকা। সোনালী মুরগি ২৭০ টাকা থেকে কমে এখন ২৪০ টাকা কেজি।
ব্যবসায়ী জনি বলেন, বাজারে এখন মুরগির দাম কম রয়েছে। তবে আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। কাঠেরপুলে গরুর মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সাব্বির বীফ হাউসের ম্যানেজার টিটো বলেন, হাটে গরু উঠছে কম। যা উঠছে তা বেশি দামে আমাদের কিনতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে গরুর মাংসের দাম বাড়তে পারে। তবে খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।