বাংলার ভোর প্রতিবেদক
‘মানস হৃদয়ের তুমি ওগো মানসী আমার/ক্ষণেক দাঁড়াও ফিরে রেখ মিনতি আমার। বিরহের গাঁথা মালা প্রিয়া পরাব কার গলে/কেঁদেও কাঁদাবো না আর জ্বলে আঁখি জলে।’

আকাক্সক্ষার প্রতিচ্ছবি এভাবেই কবিতায় ব্যক্ত করেছিলেন কবি বুনো নাজমুল যশোরী। বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক এম এম নাজমুল হক (কবি বুনো নাজমুল যশোরী) এর ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার ১ মে। কবিতা ছাড়াও অসংখ্য গান, গল্প ও প্রবন্ধ লিখে গেছেন তিনি। কবি বুনো নাজমুল যশোরীর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পান্ডুলিপি থেকে সাহিত্যকর্ম সমাজের কাছে তুলে ধরার জন্য চেষ্টা করছেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র কবি নাঈম নাজমুল।

কবি বুনো নাজমুল যশোরী ১৯৪৭ সালের ১ মে তৎকালীন যশোর জেলার নড়াইল মহকুমার ১২ নম্বর বিছালী ইউনিয়নের চাকই গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা এম জিতু মোল্লা এবং মাতা বড়ু বিবি। তিনি ১৯৬২ সালে খুলনার ফুলতলার পায়গ্রাম কসবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৬৪ সালে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজ হতে আইএসসি। ১৯৬৭ সালে যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭২ সালে অভয়নগরের নওয়াপাড়া কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে এমএ অধ্যয়ন করেন তিনি।

বুনো নাজমুল যশোরী দেশমাতৃকার জন্য ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। তিনি অভয়নগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ছিলেন। স্বাধীনতার পর থেকে কবি বুনো নাজমুল স্থায়ীভাবে অভয়নগরের গুয়াখোলা গ্রামে বসবাস করতেন। কর্মজীবনে তিনি জেজেআই জুটমিলের সুপারভাইজার, নওয়াপাড়া এবং ফুলতলা কলেজে ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করেন। পরবর্তীতে মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে ১৯৯১ সালের ২ ডিসেম্বর হতে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

কবি বুনো নাজমুল যশোরীর উল্লেখযোগ্য দুটি কাব্য গ্রন্থ ‘মুক্তিবীণা’ ও ‘হৃদয়লীনা’। ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বুনো নাজমুল যশোরীর ‘নির্বাচিত কবিতা’ বইটি প্রকাশ হয়। বুনো নাজমুল যশোরী ১৯৯৪ সালের ২৫ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে নওয়াপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই স্ত্রী, চার পুত্র, দুই কন্যাসহ অনেক শুভাকাক্সক্ষী রেখে যান তিনি। আজকের এই দিনে কবির পরিবারের পক্ষ থেকে তার জন্য দোয়া কামনা করা হয়েছে।

Share.
Exit mobile version