বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে ১৫ দিন ধরে জন্ম নিবন্ধনের কাজ হচ্ছে না। ফলে পরিষদে জন্ম নিবন্ধনের কাজ করাতে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছেন ওই ইউনিয়নের বাসিন্দারা। গেল ১৫ দিন কাজ বন্ধ থাকায় অন্তত ২৫০টি জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ঝুলে আছে। আত্মগোপনে থাকা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম জিন্নার কাছে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) রক্ষিত থাকায় জন্ম নিবন্ধনের কাজে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন জন্ম নিবন্ধন সনদ বের করার জন্য সার্ভারে প্রবেশ করতে গেলে একটি পাসওয়ার্ডের প্রয়োজন হয়। যাকে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা সংক্ষেপে ওটিপি বলে। পরিষদের চেয়ারম্যানের মোবাইল নম্বরে ওই ওটিপি যায়। এরপর তিনি উদ্যোক্তাদের ওটিপি সরবরাহ দিলে জন্ম নিবন্ধনের কাজ শুরু হয়। খেদাপাড়া ইউনিয়নের মামুদকাটি গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে মেয়ের জন্ম নিবন্ধনের জন্য পরিষদে ঘুরছি। সেখান থেকে জানানো হয়েছে চেয়ারম্যান ওটিপি দিচ্ছেন না। এজন্য আমার কাজ হচ্ছে না।
খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুল আলিম বলেন, পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ অনেকদিন ধরে পরিষদে আসেন না। প্রতিদিন জন্ম নিবন্ধনের কাজ চলমান রাখতে আমরা নিয়মিত চেয়ারম্যানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ওটিপি নিতাম। চেয়ারম্যান জিন্নাহ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তার স্থানে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মুনসুর আলীকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে চিঠির মাধ্যমে প্রশাসকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে জিন্নাহ চেয়ারম্যান গত মাসের ২৫ তারিখ থেকে ওটিপি দেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এজন্য সেই থেকে জন্ম নিবন্ধনের কাজ বন্ধ রয়েছে।
সচিব আরও বলেন, গত ১৫ দিনে জন্ম নিবন্ধনের প্রায় ২৫০টি আবেদন ঝুলে আছে। আজ (রোববার) জন্ম নিবন্ধনের জন্য নতুন ১০-১২টি আবেদন জমা পড়েছে। আমরা ইউএনওর সাথে কথা বলেছি। নতুন দায়িত্ব পাওয়া প্রশাসকের নামে নতুন করে ওটিপি দেয়া হলে জন্ম নিবন্ধনের কাজ শুরু করতে পারব।
খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পরিষদে অনিয়মিত হয়ে পড়েন তিনি। আগে মাঝে মধ্যে চেয়ারম্যান পরিষদে হাজির হলেও গেল তিন-চার মাস ধরে তিনি আত্মগোপনে আছেন।
খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নতুন প্রশাসক মুনসুর আলী বলেন, আমি লিখিতভাবে পরিষদের দায়িত্ব পেয়েছি। ইউএনওর সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত ওটিপি ঠিক হয়ে যাবে।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে ওটিপির কারণে জন্ম নিবন্ধনের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি জানতে পেরেছি। নতুন দায়িত্ব পাওয়া প্রশাসকের নামে ওটিপি দেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে নতুন ওটিপি পাওয়া যাবে।