বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ঢাকা ও অন্যান্য শহরে আদিবাসী ছাত্রদের উপর হামলার প্রতিবাদে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় প্রগতিশীল ছাত্র সমাজের ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। বিক্ষোভে অংশ নেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের যশোর জেলা সম্পাদক কমরেড তসলিম-উর-রহমান, নয়া গণতান্ত্রিক গণমোর্চা জেলা সমন্বয়ক খবির শিকদার, যুব নেতা শেখ আলাউদ্দীন, শিক্ষক আলাউদ্দীন, এবং শিক্ষার্থী সুরাইয়া শিকদার এশাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, এই হামলার দায় রাষ্ট্র ও প্রশাসনকেই নিতে হবে। অবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও শাস্তির আওতায় আনতে হবে। বিশেষ করে, বক্তারা পাঠ্যপুস্তকের উপর থাকা ‘আদিবাসী’ শব্দের গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ২০২৫ সালের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি গ্রাফিতি ছিল। যা বাংলাদেশের বহুজাতিক জাতিগত বৈচিত্র্যকে তুলে ধরে। তবে উগ্র জাতীয়তাবাদী চেতনায় সজ্জিত কিছু সংগঠন রাষ্ট্রদ্রোহিতার দোহাই দিয়ে এই গ্রাফিতি মুছে ফেলতে চাপ সৃষ্টি করেছিল। যার ফলে এনসিটিবি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে এই গ্রাফিতি মুছে দেয় এবং তার জায়গায় নতুন একটি গ্রাফিতি সংযোজন করে।
সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, এনসিটিবি এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়ে আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকারকে অবমাননা করেছে। এটি আদিবাসী জনগণের প্রতি রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গির একটি দৃষ্টান্ত।
এ সময় বক্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে, আদিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণের লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর পেছনে রাষ্ট্রের আসল উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ এবং তাদের সাংস্কৃতিক অস্তিত্বকে বিলীন করে দেয়া। পূর্বের হাসিনা-আওয়ামী সরকারের ফ্যাসিস্ট নীতির ধারাবাহিকতায় এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কিন্তু তা আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের পথ থেকে তাদের বিচ্যুত করতে সক্ষম হবে না।
বিক্ষোভ শেষে, বক্তারা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর প্রতি আহ্বান জানান যাতে তারা আদিবাসীদের পাশে দাঁড়িয়ে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যায়। তারা আরও বলেন, এটি শুধু আদিবাসী জনগণের জন্য নয়। বরং দেশের সকল নিপীড়িত জনগণের বিষয়।