বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর শহরতলীর সীতারামপুর এলাকা থেকে বড় বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় করতে এসেছেন মিলন সরদার। পেশায় তিনি একজন রাজমিস্ত্রীর সহকারী। ৮০০ টাকার বাজার করে অর্ধেক খালি বাজারের ব্যাগ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।
শুক্রবার বিকেলে শহরের বড় বাজারের কালী মন্দিরের সামনে কথা হয় তার সাথে। বাজারের জিনিসের দাম নিয়ে অক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাজারে জিনিসের দাম খুব বেশি। প্রায় ৮০০ টাকার বাজার করেছি তাও ব্যাগ ভরেনি। কেনার মধ্যে এক কেজি পাঙ্গাস মাছ কিনেছি ৩৫০ টাকা দিয়ে, এক কেজি বেগুন ১০০ টাকা। আগে যদি এক কেজি জিনিস কিনতাম এখন কিনছি আধা কেজি। পরিবারের লোকজনদের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দিতে দিনরাত পরিশ্রম করছি। যে মজুরি পাই তা দিয়ে এখনকার সময় সংসার চালাতো কষ্টকর। বাজারে একটার দাম কমলে আর একটার দামম বাড়ে। এভাবে দাম উঠা নামা করলে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। বাজারে প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর উচিৎ।
শুধু মিলন সরদার নয়, রিকসাচালক জহির উদ্দীন, এনজিও কর্মী জান্নাত আরাসহ একাধিক ক্রেতা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
শুক্রবার যশোরের বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। খোলা সয়াবিন তেল দোকান ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৮৮ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি। শুধু আলু কিংবা তেল নয় বাজারের অন্যন্য শাক সবজির দামও চড়া। যা রীতিমত নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। কাঁচা মরিচ ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, ফুলকপি ১০০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, কলা ৫০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, ওল ৮০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, মেচুড়ি ১০০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা, শুকনো মরিচ ৫০০ টাকা, আদা ১০০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, গাজর ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, ক্যাপসিক্যাম ৩৩০ থেকে ৬০০ টাকা, মানকচু ৬০ টাকা, আমড়া ৩০ টাকা, মূলা ৪০ টাকা, ভাত ভেদে মুরগির মাংস ১৮০ থেকে ৫০০ টাকা, গরুর মাংস ৭০০ টাকা, ছাগলের মাংস ১১০০ টাকা, সরিষার তেল ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি ৪৮ থেকে ৫২ টাকা, লাউ পিচ ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
তামিম হোসেন নামে এক দোকানদার জানান, দেশে আলুর সংকট দেখা যাচ্ছে। আমরাও মোকামে আলু কিনতে গিয়ে পাচ্ছি না। নতুন আলু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আমরা যেমন দামে কিনতে পারি তেমন দামে বিক্রি করি।
শাহিন ইসলাম নামে অন্য এক দোকানদার বলেন, বাজারে কাঁচামালের দাম উঠা নামা করে। জিনিসের মানের উপরও নির্ভর করে দাম। এখন ৫০ টাকার নিচে ভালো কোনো সবজির পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে আলুর দাম কমতে এখনও দেরি হতে পারে। মোকামে নতুন আলু বেশি না আসলে সহজে দাম কমবে না।
এনজিও কর্মী জান্নাত আরা বলেন, মাসে যে টাকা বেতন আসে তাকে এখনকার সময় সপ্তাহে দুই দিন ভালো মন্দ কিনে খাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নিয়মিত বাজার মনাটরিং করে প্রতি সপ্তাহে জিনিসের দাম বেঁধে দেওয়ার দাবিও করেন তিনি।