বাংলার ভোর প্রতিবেদক
মাগুরায় জবরদখলকারী হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম আখরোটের দখল থেকে বাড়ি উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী বাড়ির প্রকৃত মালিক উর্মি শায়লা মনিরা।
শনিবার বেলা ১১ টায় মাগুরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে উর্মি শায়লা মনিরা অভিযোগ করে বলেন, আমার পিতার রেখে যাওয়া মাগুরা শহরের হরিশদত্ত রোডে অবস্থিত ৮.২০ শতাংশ জমিসহ বাড়ির কর ফাঁকি দিয়ে মাজহারুল ইসলাম আখরোট চেয়ারম্যান খাস জমিতে পরিণত করে। এবং সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখরের ক্ষমতার দাপটে উক্ত জমি দখল করে বসবাস করতে থাকে।
আমি ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আমার পৈতৃক জমি ভাগ-বাটোয়ারার জন্য স্থানীয় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করি। তখন তাদের কাছ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম আমাদেরকে নিয়ে মোট চারবার শুনানী করেন। তখন আমরা জানতে পারি মাগুরা শহরের হরিশদত্ত রোডে অবস্থিত চার তলা বাড়িটি আমার বাবার নিজ নামীয় সম্পত্তি। কিন্তু দীর্ঘদিন আখরোট চেয়্যারম্যান ক্ষমতার জোরে দখল করে রেখেছে।
একপর্যায়ে সকল বৈধ জমির সকল কাগজপত্র দিয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট জমির মালিকানা দাবি করে আবেদন করলে জেলা প্রশাসক বিভিন্নভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেটা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পাঠায়। ৩১ জুন ২০২৩ তারিখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অবৈধ দখলদার, দুর্নীতিবাজ আখরোট চেয়ারম্যানের এই অনৈতিক কাজের জন্য বহিস্কারের আদেশ দেয়। আর ৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমিন প্রধান স্বাক্ষরিত ১২৮০ নং স্মারকের একটি চিঠিতে প্রকৃত বাড়ির মালিক হিসেবে আমাকে (উর্মি শায়লা মনিরা) বুঝিয়ে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন। জেলা প্রশাসক বাড়িটি বুঝিয়ে দিতে গড়িমসি শুরু করেন। আমি বাড়িটি বুঝিয়ে নিতে মাগুরায় গেলে ১৬ আগস্ট ২০২৩ আখরোট চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শিখরের নির্দেশে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী আমার উপরে হামলা চালায় এবং আমার কাছে থাকা জমির মূল কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি পুলিশ। এরপর আমি কাগজপত্র নিয়ে আবারো জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে গেলে এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ আমার সাথে দেখা করেননি।
৬ আগস্ট ২০২৪ তারিখে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আমাকে ফোন দিয়ে বলেন ১০ দিনের মধ্যে আপনার বাড়িটি বুঝে নিতে হবে এবং ৩ লাখ টাকা দিতে হবে। পরবর্তীতে আমি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগকে ফোন দিলে তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মাহবুবুল হকের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এরপর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মাহবুবুল হক আমাকে ফোন দিলে আমি জিজ্ঞাসা করি বাড়িটি বুঝিয়ে দিতে কত সময় লাগবে তিনি বলেন আগের জন যেরকম রেখে গেছে আমি সেরকম রেখে যাব।
সংবাদ সম্মেলনে কুখ্যাত সন্ত্রাসী, দখলকারী, দুর্নীতিবাজ আখরোট চেয়ারম্যানের দখল থেকে আমার বৈধ বাড়ি ও জমিটি উদ্ধার পূর্বক মালিকানা ফিরে পেতে আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।