♦৯১টি কেন্দ্রের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ৩৭টি
♦ চলছে এমপির নামে ভোট প্রার্থনা
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ১ম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে কাল ৮ মে। এবার কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৩ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। এতে করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান, সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান রাশেদ শমসের, জাতীয় শ্রমিক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সহ-সভাপতি ইমদাদুল হক সোহাগ, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শিবলী নোমানী ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল। এছাড়াও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ দু’গ্রুপে বিভক্ত। একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুল আজীম আনার এবং অন্য একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়ুব হোসেন। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বি ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জনই স্থানীয় সংসদ সদস্যের অনুসারী। বাকি একজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়ুব হোসেন খানের অনুসারী। এই নির্বাচনে এমপির অনুসারী ৪ প্রার্থীই ভোটের মাঠে রয়েছেন বেশ শক্তভাবেই। কেউ কেউ নিজেকে এমপির পছন্দের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিচ্ছেন। তবে যে প্রার্থী দুর্দিনে নেতাকর্মীদের পাশে থাকে তাকেই ভোট দিবেন বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
ভোটাররা জানান, এই নির্বাচনে কোন উত্তাপ নেই। সবাই একই দলের প্রার্থী। অন্য যেকোন নির্বাচনে যেভাবে আলোচনা হয় এখন সেটা হচ্ছে না। এই ভোটে চেয়ারম্যান পদে ৫ জনই আওয়ামী লীগের। এই উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতের ভোট বেশি। এই দুই দলের সমর্থকদের ভোট যে প্রার্থী বেশি পাবে তিনিই জয়লাভ করবেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ৩২৯, মহিলা ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৫৯২ ও হিজড়া ভোটার রয়েছে ৩ জন। এ উপজেলায় ৯১টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ৩৭টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। নির্বাচনে উপজেলায় ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ১১টি ইউনিয়নে ১১ জন ও পৌরসভায় ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও নির্বাচনে ৩৭৪ জন পুলিশ, ১২৯৪ জন আনসার সদস্যসহ বিজিবি, র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী ইমদাদুল হক সোহাগ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এই নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। যার জনপ্রিয়তা বেশি তিনি জয়লাভ করবে। এই নির্বাচনে কারও কথা না শুনে যোগ্য প্রার্থীকেই জনগণ ভোট দিবে। শুনেছি ২/১ জন প্রার্থী স্থানীয় এমপির নাম ভাঙিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এগুলো করার কোন সুযোগ নেই। ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হলে তিনি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতি ও জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল বলেন, ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হলে তারা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বর্জনের দাবিতে লিফলেট বিতরণ করছে বিএনপি। তাদের নেতাকর্মীসহ জনসাধারণকে ভোট প্রদান করতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এই নির্বাচনও মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে। এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার রশিদুল আলম বলেন, উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে ব্যালট পেপার। তার আগেই ভোট গ্রহণের অন্য সরঞ্জাম কেন্দ্রে পাঠানোর কাজ চলছে।