অভয়নগর প্রতিনিধি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ আসন থেকে (অভয়নগর-বাঘারপাড়া উপজেলা ও বসুন্দিয়া ইউনিয়ন) নির্বাচিত নৌকার প্রার্থী অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র এনামুল হক বাবুলকে মন্ত্রিসভায় দেখতে চান এই আসনের জনগণ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এই আসনে কোনো মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী পায়নি অভয়নগর ও বাঘারপাড়াবাসী।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া সংসদ নির্বাচনে অভয়নগর-বাঘারপাড়া উপজেলা ও বসুন্দিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন, আওয়ামী পরিবারসহ দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ নৌকাকে ভালোবেসে যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮১ হাজার ২৮৫ ভোটে বাবুলকে বিজয়ী করে এ আসনটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেন। সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও যশোর-৪ আসনকে রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে নৌকার মাঝি এনামুল হক বাবুলকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এই আসনের সর্বস্তরের মানুষ জোর আহ্বান জানিয়েছে।
যশোর-৪ আসনের আগের সবকটি নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এই আসনে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে ১৯৭০, ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১ সাল ও ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত শাহ্ হাদীউজ্জামান। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে এ আসনে নাজিম উদ্দিন আল আজাদ এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সাল বিএনপি জোটের জাতীয় পার্টির (না-ফি) এম এম আমিন উদ্দিন এমপি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হয়ে একাধিপত্ব ধরে রেখেছেন রনজিত কুমার রায়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রত্যাশী ছিলেন ১৩ জন। সবাইকে টেক্কা দিয়ে টিকিট নিশ্চিত করেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান এনামুল হক বাবুল।
এনামুল হক বাবুল নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র। তিনি যশোর-খুলনাবাসীর দুঃখ ভবদহ পানি নিষ্কাশন আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক। ভবদহ অঞ্চলের পানিবন্দি জীবনের শুরু আশির দশকে। দীর্ঘদিন ধরে ভবদহ সংকট সমাধানের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে আসছিলেন এনামুল হক বাবুল। এ সমস্যা সমাধানের মধ্য দিয়ে তার একটি সফল সমাপ্তি হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা। ভবদহ জলাবদ্ধতা সংকটের কারণে স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকা যে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এবং নদীগুলোর নাব্যতা হারিয়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় উৎপাদন ব্যবস্থায় যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, সেই সংকট থেকে উত্তরণ হবেÑ এমনটিই বিশ্বাস এলাকার মানুষের। এ ছাড়া ১৯৯০ সালে সৈরচার বিরোধী আন্দোলন ও এরশাদের পদত্যাগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এনামুল হক বাবুল।
দীর্ঘদিন ধরে নওয়াপাড়া পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র হিসেবে পৌরসভার শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ছিল বাবুলের কঠোর পরিশ্রম। সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হিসেবে রয়েছে তার আলাদা পরিচিতি। উচ্চশিক্ষিত এ জনপ্রতিনিধি সততা, নিষ্ঠা ও মেধার সঙ্গে কাজ করে সুনাম কুড়িয়েছেন। তাই সদ্য সমাপ্ত সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হক বাবুলকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় এই আসনের সর্বস্তরের মানুষ।
বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান আলী বলেন, এনামুল হক বাবুল একজন সৎ লোক। মন্ত্রী হওয়ার সব যোগ্যতা তার মধ্যে রয়েছে।
নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত দাস শান্ত বলেন, এ আসন বিগত দিনে কখনো মন্ত্রীত্ব পায়নি। এনামুল হক বাবুল যেন মন্ত্রিসভার সদস্য হতে পারেন, সে জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাঘারপাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মোল্যা বলেন, এনামুল হক বাবুল সৎ, নিষ্ঠাবান, পরিশ্রমী ও শিক্ষিত জনপ্রতিনিধি। তাকে মন্ত্রিসভায় সদস্য করে যশোর-৪ আসনের সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার এবং দৃশ্যমান সব সমস্যার উত্তরণ চান তিনি।
অভয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর বলেন, এনামুল হক বাবুল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে যশোর-৪ আসন থেকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এই আসনের নৌকার মাঝি এনামুল হক বাবুল একজন দক্ষ সাংগঠনিক ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি সৎ, নিষ্ঠাবান ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে মন্ত্রী পদ পেলে অভয়নগর-বাঘারপাড়াবাসীর বহুদিনের মন্ত্রীত্ব পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। এ ছাড়া তার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে উন্নয়নের বহুধাপ এগিয়ে যাবে।
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এনামুল হক বাবুল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই আসনের দুই উপজেলায় নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রতিটি গ্রাম ঘুরে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী সাংগঠনিক ভীত গড়ে তুলেছি। ফলে এই আসনটি হয়ে ওঠে আওয়ামী লীগের দুর্গ। আমি জনগণকে কতটা ভালোবাসি তার প্রমাণ হচ্ছে তাদের পবিত্র ভোটে আমি এমপি নির্বাচিত হয়েছি। রাজনীতির মূল ভরসা জনগণ। তাদের সুখ-দুঃখের সময় আমি পাশে থেকেছি। তাই জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আমি সারা জীবন জনগনের সুখ-দুঃখের সাথী হিসেবে পাশে থাকব।
শিরোনাম:
- আলুর দাম লাগামহীন ভোক্তার নাভিশ্বাস
- শীতে ফুটপাতে গরম কাপড় বিক্রির ধুম
- একটা সংস্কার কমিটি দিয়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব না: মির্জা ফখরুল
- নিখোঁজের ৩ দিন পর কপোতাক্ষ নদে মিলল বৃদ্ধার মরদেহ
- কৃষ্ণনগরে আরাফাত কোকো স্মৃতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন রতনপুর
- পাখির সাথে মানুষের ভালোবাসার গল্প !
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়