ভি পি ইলিয়াস
যশোরের ঝিকরগাছার উপর দিয়ে বয়ে গেছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহ্যবাহী কপোতাক্ষ নদ। নদের পাড়ের মাটি কেটে বিক্রি করে দেয়ায় পাড়ের আবাদি জমি এবং ঘরবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। মাটি বিক্রি ব্যবসায়ী উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের আশরাফুল আলম তনি সিণ্ডিকেটের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
২০১৯ সালে প্রায় ৩ শত কোটি টাকা ব্যয়ে এই নদ খনন করে সেখান থেকে উত্তোলিত মাটি দিয়ে নদের দুই ধারে পাড় বাধা হয়েছিলো। সরকারিভাবে ওই পাড়ের উপর গাছও লাগানো হয়েছিল। কিন্তু মাটিখেকোদের নজর পড়েছে ওই মাটির উপর। প্রকাশ্য দিবালোকে সকলের নাকের ডগায় ঝিকরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কপোতাক্ষ নদের পাড়ের এই মাটি এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে কেটে ট্রাক আর ট্রলিতে করে বিক্রি করে দিচ্ছে একটি চক্র। স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কিছু বলতে পারছেনা এলাকার মানুষ।
অনুসন্ধানে জানা যায় ঝিকরগাছা সদর ইউনিয়নের পায়রাডাঙা (কুটিপাড়া) গ্রামের আশিক ড্রাইভারের ছেলে আশরাফুল আলম তনির নেতৃত্বে এই মাটি কাটা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গ্রামবাসী বলেন, দিনরাত ২৪ ঘন্টা এই মাটি কাটা চলছে। ঝিকরগাছা মোবারকপুর গ্রাম থেকে শুরু করে পায়রাডাঙা মহিলা মাদ্রাসার নিচ পর্যন্ত মাটি কেটে বিক্রি করে দিয়েছে তনি। তার সাথে আরও কয়েকজন জড়িত আছে।
তরিকুল ইসলাম নামের একজন বলেন, পাড়ের মাটি কেটে নেয়ার ফলে এখন আমাদের জমি এবং গাছপালা নদী ভাঙনের মুখে পড়বে। মাটি কাটা বন্ধ করতে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করেন।
মাটি কাটার নেতৃত্বে নাম উঠে আসা আশরাফুল আলম তনি বলেন, আমি কোনো সরকারি মাটি কাটিনি। যাদের জমি থেকে মাটি কেটেছি তাদেরকে ২০/৩০ ট্রলি দিয়েছি আর আমি তাদের কাছ থেকে মাটি কিনে আমার একটা পুকুর ভরাট করেছি। কাদের কাছ থেকে মাটি কিনেছেন তাদের নাম জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভুপালি সরকার বলেন, নদের মাটি কাটা হচ্ছে এটা জানা ছিলোনা। মোবাইল টিম পরিচালনা করে এই কাজের সাথে জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
যশোর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, সরকারি মাটি কাটার অধিকার কারো নেই। আমাদের জনবল কম। ফলে এসব দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হচ্ছে। ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে পরামর্শ করে মাটিখোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।