বাংলার ভোর প্রতিবেদক
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের বিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী গনেশ বাবুর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কোনো কারণ ছাড়াই প্রতি বিলে ১ হাজার ৫৫০ টাকা করে টাকা কেটে রাখেন তিনি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৭৩ লাখ টাকা পকেটে ভরেছেন তিনি। এ অবস্থায় কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ার থেকে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ারের অপারেশনাল প্ল্যানের অনুকূলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য পরিবহন, পরিচ্ছন্নতা ও উৎসব পালনের জন্য বরাদ্দের বার্ষিক একটি বিল দেয়া হয়। উপজেলা হিসাব সংরক্ষণ অফিসে বিল দাখিলের পর তা কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) দেয়া হয়। কিন্তু যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় ৪৭টি কমিউনিটি ক্লিনিকের বরাদ্দের টাকা সঠিকভাবে বণ্টন হচ্ছে না। মূলত এসব ক্লিনিকের জন্য বরাদ্দ ৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা। এরমধ্যে পরিবহন ব্যয় থেকে ১০ শতাংশ, ব্যানার থেকে ১০ শতাংশ ও আপ্যায়ন থেকে ৫ শতাংশ ভ্যাট কেটে রাখার কথা। এসব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিরা পাবে ১০ হাজার ৪৫০ টাকা করে। কিন্তু তাদেরকে দেয়া হয়েছে ৮ হাজার ৯০০ টাকা করে।
অভিযোগ উঠেছে, অফিস সহকারী গনেশ বাবু উপজেলা হিসাব সংরক্ষণ অফিসে নিজের মতো করে হিসাব দাখিল করেন। এরপর বিল উত্তোলন করে তিনি নিজে সিএইচসিপিদের মাঝে টাকা বিতরণ করেন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক সিএইচসিপি জানান, কম অর্থ দেয়ার বিষয়ে গনেশ বাবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দেন না। তার দাবি অন্যান্য উপজেলা যেভাবে দেয়া হয়, সেভাবেই তিনি দিচ্ছেন। কোনো চিঠি দেখিয়ে লাভ হবে না।
এ বিষয়ে গনেশ বাবু বলেন, ‘যারা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের নামের তালিকা আমার কাছে জমা দেয়ার পর বক্তব্য দেবো। সবাইকে টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।’ এর-বেশি কিছু জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচএর সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে টিএইচএ তন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘ভ্যাট ও অ্যাকাউন্টস অডিটের কিছু খরচ কাটা হয়। তাছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ভ্যাট কাটার কথা না থাকলেও উপজেলা হিসাব সংরক্ষণ অফিস ভ্যাট কাটে। আর অফিসের ‘বড় বাবু’ গিয়ে বিলটি ছাড় করিয়ে আনেন। এ নিয়ে কোনো জটিলতা নেই।’
অভিযোগের বিষয়ে সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি অবহিত হলাম। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’