বাংলার ভোর প্রতিবেদক:
বিগত কয়েক দিনে সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে চলমান সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হচ্ছে যশোরের সড়ক পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা। গতকাল বুধবার আন্তঃজেলার কয়েকটি রুটে বিশেষ নিরাপত্তায় বিচ্ছিন্নভাবে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করেছে। বেনাপোল পোর্ট থেকে খালাস করা হয়েছে প্রায় ৩৫ টা পণ্যবাহী ট্রাক। যশোর নিউমার্কেট ও শংকরপুর বাস টার্মিনাল থেকেও কিছু বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়তে দেখা গেছে। সবমিলিয়ে কারফিউয়ের পঞ্চম দিনে যশোরের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক ছিল। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক অনেকটা কমেছে। রাস্তায় যানবহন চলাচলের সাথে সাথে লোকজনের উপস্থিতি বেড়েছে। শহরের কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া শহরের সর্বত্র সেনাবহিনী, পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়াতে আশার আলো দেখছেন পরিবহন সংশ্লিষ্ট মালিক ও কর্মচারীরা। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি কারফিউ শিথিল থাকার কারণে যশোর জেলা শহর থেকে বাস অন্য জেলা ও উপজেলায় ছেড়ে গেছে। এমনকি কিছু পরিবহন যশোর থেকে মহাখালী, সায়েদাবাদ ও গাবতলী বাস টার্মিনালে যেতে যাত্রা শুরু করেছে। জেলার ভিতরেও বাড়তে পারে লোকাল গণপরিবহন।
হানিফ পরিবহনের ম্যানেজার তসলিম আহম্মেদ বলেন, বুধবার দিনের বেলায় যশোর থেকে তাদের কোম্পানিনর চারটি গাড়ি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। তবে এদিন রাতে কোন পরিবহন চলবে না। পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে গাড়ির সংখ্যা আরো বাড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ঈগল পরিবহনের কাউন্টারম্যান কামাল হোসেন বলেন, বুধবার তাদের কোম্পানির বেশ কয়েটি গাড়ি ঢাকার পথে গেছে। দেশ ট্রাভেলস এর কাউন্টারম্যান রোমেল আহম্মেদ জানান, তাদের ননএসি গাড়িগুলো বেনাপোল হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে এদিন যশোর ত্যাগ করেছে। এ সময় পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা আরো জানিয়েছেন বুধবার সন্ধ্যার পর উত্তরবঙ্গের কিছু গাড়ি যশোরের বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে ছেড়ে গেছে।
যশোর জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আরিফ চাকলাদার জানিয়েছেন, কারফিউ শিথিল থাকাতে অনেক মালিকরা তাদের গাড়ি ছাড়ছে। তাছাড়া দূরে আটকা পড়া গাড়ি গুলো শহরে ফিরছে।
এদিকে, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকা থেকে কাছাকাছি দূরত্ব ট্রেন চলবে। দূরপাল্লার ট্রেন চালুর বিষয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক হবে। দিনের যে সময়টা কারফিউ শিথিল থাকবে ওই সময় চালানো হবে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-টাঙ্গাইল এ রকম দূরত্বে কমিউটার ট্রেনগুলো চালানো হবে। যেগুলো চার-পাঁচ ঘণ্টায় যাওয়া-আসা করতে পারবে। দূরপাল্লার ট্রেনগুলোর বিষয়ে আমরা আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বসে সিদ্ধান্ত নেব। এটা নির্ভর করছে কারফিউ থাকবে কিনা সেটার ওপর। কেবল ঢাকা থেকে নয়, অন্যান্য গন্তব্য থেকেও যে ট্রেনগুলো ছাড়ে, সেখানেও একই নীতিমালা থাকবে।