বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের কোদালিয়া-তেজরোল রাস্তার উন্নয়ন কাজে অনিয়মের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর আনা অভিযোগের বিষয়ে দৈনিক বাংলার ভোর পত্রিকায় ‘দশদিন না পেরোতেই উঠে যাচ্ছে পিচঢালাই’ শিরোনামে ৯ মে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এরপরই তড়িঘড়ি করে রাস্তা মেরামতে নামেন ঠিকাদার। কিন্তু এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে নাম মাত্র সংস্কার করতে পারেননি তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে ৫ থেকে ৭ জন শ্রমিক কাদালিয়া-তেজরোল নতুন করা পিচের রাস্তা পরিস্কার করছে। তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ঠিকাদারের শ্রমিক হিসেবে তারা রাস্তা পরিস্কার করছেন। নতুন পিচের রাস্তা পুনরায় কেন পরিস্কার করছেন জানতে চাইলে বলেন, রাস্তার পিচ বসে যাচ্ছে। রাস্তা পরিস্কার করে এর উপর আবার তেল মেরে মেরামত করা হবে।
কোদালিয়া-তেজরোল এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, দীর্ঘ বছরের সাধনার রাস্তা এটি তাদের। আগে ইটের ছলিং ছিলো। এলাকাবাসীর চলাচলের অসুবিধা হত। অনেক দিনের দাবির প্রেক্ষিতে সেই ইটের সলিংটা পিচের রাস্তায় রুপ নিয়েছে।
কিন্তু ঠিকাদার ও এলজিইডি অফিসের যোগসাজেসে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করার কারণে রাস্তার পিচ রুটির মত উঠে যাচ্ছে। রাস্তা তৈরির সময় আমরা অনুনয় বিনয় করেছিলাম। রাস্তার বেড ভালো ভাবে তৈরি করেনি। পিচের নিচে পোড়া মবিল আর ডিজেল দেছে। ঠিকাদার নিজের খেয়াল খুশিমত কাজ করেছে। যে কারণে দশদিন না যেতে রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে।
তারা আরও বলেন, এখন ঠিকাদার এলজিইডি অফিসের লোকজন এসে এই রাস্তার উপরে আবার কাজ করতে চাচ্ছে। আমরা এলাকাবাসী ডিসি অফিসে গণপিটিশন দিয়েছি। এই রাস্তা আবার নতুন করে না করলে আমরা এই রাস্তার উপর অন্য কোনো রং চং করতে দেবো না।
এ সময় ঠিকাদার মেহেদি হাসান রামুর সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, রাস্তা যখন তৈরি করা হয়েছে তখন প্রচণ্ড তাপদাহ ছিলো। অত্যধিক তাপের কারণে রাস্তার পিচ ভালো ভাবে আঁটেনি। কয়েকদিন গেলে রাস্তা স্বাভাবিক হয়ে যেত। এলাকাবাসীর দাবির মুখে আমরা এসেছিলাম পুনরায় মেরামত করতে। কিন্তু তারা আমাদের এই রাস্তার উপর আর কাজ করতে দিতে চাচ্ছে না। এখন বিষয়টা আর আমার হাতে নেই। অফিস থেকে যে সিদ্ধান্ত দেবে সে মোতাবেক কাজ হবে।
এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল্লাহ বলেন, রাস্তার কাজের গুণগত মান খারাপ হলে আমাদের ল্যাব পরীক্ষা নিরীক্ষা করার সময় খারাপ রিপোর্ট দিত। তাদের রিপোর্ট ভালো ছিলো। এখানে খারাপ মানের মালামাল বা কাজের মান খারাপ হলে আমরা কাজ বন্ধ রাখি। তেমন কোনো খারাপ রিপোর্ট আমাদের কাছে ছিলো না।
উল্লেখ্য, গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ (আইআরআইডিপি) এর আওতায় কোদালিয়া বাজার হারুনের দোকান থেকে তেজরোল ইউনুসের বাড়ি পর্যন্ত ১ কিলোমিটার ২৪০ মিটার পর্যন্ত রাস্তার পিচ ঢালাই করা হয়েছে। ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পান যশোর শহরতলির বারান্দীপাড়া এলাকার ঠিকাদার নুর ইসলাম। পরবর্তীতে তার থেকে কাজটি কিনে নেন সদর উপজেলার পুরাতন খাজুরা এলাকার প্রয়াত ঠিকাদার আব্দুর সাত্তারের ছেলে মেহেদী হাসান রামুন। তিনিই সম্প্রতি ১০ ফিট প্রস্থের ওই রাস্তার উন্নয়ন কাজ শেষ করেছেন।