বাংলার ভোর প্রতিবেদক
চিকিৎসার নামে যশোরের এক গৃহবধূকে ভারতে পাচার এবং পতিতালয়ে বিক্রির অভিযোগে আদালতে দেয়া অভিযোগটি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর স্বামী সদর উপজেলার বাউলিয়ার বাসিন্দা গত ২৯ ব্রেুয়ারি আদালতে দাখিল করেন। আদালতের নির্দেশে শুক্রবার ১৫ মার্চ থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়।
আসামিরা হলেন, একই উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের নরসিংহকাটি গ্রামের মিন্টু মোল্যা ও তার তিন ছেলে মেয়ে শাহনাজ বেগম, মাসুদ মোল্যা এবং রানা মোল্যা।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী নারীর ছোট ছেলে জন্মের পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আসামিরা তাদের পূর্ব পরিচিত ও দূর সম্পর্কের আত্মীয় এবং পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দা। শাহনাজ বেগম এসে ভুক্তভোগী নারীকে ভাল চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যেতে তার স্বামীর কাছে প্রস্তাব দেন। প্রথমে রাজি না হলেও পরে তারা রাজি হন। গত ১ জানুয়ারি ওই নারীকে চিকিৎসার জন্য ভারতের উদ্দেশ্যে নিয়ে যান।
ওই দিন বিকেলে তারা (আসামিরা) সকলেই আবার বাড়িতে ফিরে আসেন। তখন তাদের কাছে অসুস্থ ওই গৃহবধূর কথা জানতে চাইলে তাকে চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এভাবে ২৫দিন পার হলেও কোন যোগাযোগ করতে না পেরে খোঁজ নেয়ার জন্য ফের তাদের (আসামিদের) বাড়িতে যায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। কিন্তু তারা কিছু না বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টার দিকে ভারতীয় একটি নম্বর থেকে মোবাইলে ওই গৃহবধূ ফোন করে কান্নাকাটি করে বিষয়টি খুলে বলে।
তাকে সেখানে একটি পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। ওই সময় অজ্ঞাত এক মহিলা মোটা অংকের টাকা দিলে তাকে দেশে ফেরৎ দিবে বলে জানায়। তা না হলে তাকে জীবনে শেষ করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়। তাছাড়া তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হবে। এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ গ্রহণ করতে চায়নি।
ফলে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি যশোর মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনাল-১ (জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক গোলাম কিবরিয়া অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে পরবর্তী সাত কার্য দিবসের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
১৫ মার্চ কোতোয়ালি থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।