বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর জেনারেল হাসপাতালে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য ক্রমশ বাড়ছে। যার ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সাধারণ রোগীরা প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, এই দালাল চক্রেরসদস্যরা কেউ কেউ বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালের কর্মচারী আবার কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে দালালির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করাকে পেশা হিসেবে বেঁছে নিয়েছেন। হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের সাথে সক্ষতা গড়ে তুলে দালালচক্র অবাধে তাদের স্বার্থ হাসিলের কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি এমনই এক প্রতারণার শিকার হয়েছেন শহরতলীর এড়েন্দা গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম।
বুধবার সকালে তিনি চোখ দেখাতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে পৌঁছামাত্রই স্ক্যান হাসপাতালের দালাল সুব্রত দাসের খপ্পরে পড়েন তিনি। সুব্রত দাস আবুল কাশেমকে চোখের ডাক্তারের কাছে না নিয়ে হাসপাতালের বহিঃর্বিভাগের ১০ নম্বর কক্ষে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। এরপর কাশেমকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য স্ক্যান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনও সুব্রত দাস তার সাথে ছিলেন। একাধিক পরীক্ষা করানোর পর কাশেমকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওষুধ কেনার সময় তিনি জানতে পারেন যে তার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই দালাল চক্রের কার্যক্রম সংক্রান্ত একটা ভিডিও চিত্র বাংলার ভোর পত্রিকার রিপোর্টারের হাতে এসে পড়ে।
ভুক্তভোগী আবুল কাশেম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। কষ্টের ১৩০০ টাকা দালাল নষ্ট করেছে। চোখ দেখাতে এসে হার্টের ডাক্তার দেখিয়ে আমার বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
এ বিষয়ে স্ক্যান হাসপাতালের মালিক পক্ষ মহিবুল আলম বিপু জানান, সুব্রত দাস আমাদের একজন কর্মচারী এবং সে কম্পিউটার শাখায় কাজ করে। আপনি সকালে কিøনিকে আসেন সরাসরি কথা বলবানে।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) অ.ন.ম বজলুর রশীদ টুলু দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য স্বীকার করে বলেন, হাসপাতালের দালাল চক্র নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমাদের দেখলেই দালালরা পালিয়ে যায়। দালাল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের। দালাল চক্রকে রুখে দিতে আমরা সর্বোচ্চ সোচ্চার আছি।
সাধারণ রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এবং পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই দালাল চক্র এতটা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া কয়েকদিন আগে জেনারেল হাসপাতালে একজন ভূয়া ডাক্তার ধরা পড়েছে। অবিলম্বে এই দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী রোগী ও তাদের স্বজনরা।