প্রতিবেদক
যশোরের চৌগাছায় সতের মাস বয়সী কন্যা শিশুকে ঘাস পোড়া পাউডার (ক্ষেতের আগাছা দমনে ব্যবহৃত ওষুধ) খাইয়ে হত্যাচেষ্টা করে নিজেই আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহবধূ। শিশুটির শারীরিক অবস্থা আশংকাজনক। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় (সোমবার বিকেল থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত) পৃথক ঘটনায় তিনজন আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবার দাবি। নিহতরা হলেন, সাদিপুর গ্রামের মুক্তার হোসেনের স্ত্রী জেসমিন আক্তার (৩৫), বলিদাপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক (৫০), মাড়ুয়া গ্রামের যানবাহন শ্রমিক বায়েজিদ হোসেন (১৮)।
এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
চৌগাছা উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের পেটভরা গ্রামের ইউপি সদস্য শামীম রেজা বলেন, পেটভরা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের মেয়ে জেসমিন আক্তারের চার বছর আগে উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের মুক্তার হোসেনের সাথে বিয়ে হয়। তাদের জেরিন (১৭মাস) বয়সি একটি মেয়ে রয়েছে। বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ছিলো। সোমবার সন্ধ্যায় জেসমিনের শ^শুর বাড়ি থেকে সংবাদ আসে জেসমিন ও তার মেয়ে জেরিন ঘাস পোড়া (ক্ষেতের আগাছা দমনে ব্যবহৃত ওষুধ) পাউডার খেয়েছে। তখন তাদের উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসক। সেখানে জেসমিনের অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা গতকাল সকালে খুলনায় রেফার করেন। তবে জেসমিনের শ^শুর বাড়ির লোকজন তাকে খুলনায় না নিয়ে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার বিকেল চারটার কিছু আগে সাদিপুর গ্রামে গেলে শ^শুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। সেখান থেকে আমরা উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জেসমিনের ১৭ মাস বয়সী কন্যা জেরিন আশঙ্কাহজনক অবস্থায় যশোর ২৫০শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সিংহঝুলি ইউনিয়নের বলিদাপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেকের অভাব-অনটনের কারনে স্ত্রী-সন্তানের সাথে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। মঙ্গলবার সকালেও পারিবারিক বিষয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে বিবাদ হয়। পরে তিনি বাড়ি থেকে ধানের খেতে গিয়ে সকাল ১০টার দিকে ধানে দেয়া কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। মাঠে কাজ করা অন্য কৃষকরা বিষয়টি বুঝতে পেরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর যশোর ২৫০শয্যা হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
যানবাহন শ্রমিক বায়েজিদ হোসেন উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের মাড়ুয়া গ্রামের মৃত-মুক্তার আলীর ছেলে। অতিদরিদ্র পরিবারের বায়েজিদ স্থানীয় ইঞ্জিন চালিত যানবাহন আলমসাধু চালক ছিলো। বছরখানেক আগে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে সে কিছুটা মানসিক ভারসম্য হারায়। এরপর থেকে কাজ করতো না। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা রোজগার করতো তাতেই চলতো আর নিজে এখনে ওখানে ঘুরে বেড়াতো। সোমবার দুপুরে খাওয়ার সময় মা কাজ করার কথা বলে বকাঝকা করলে অভিমানে ঘরের আড়ার সাথে একটি গায়ে দেয়া চাদর দিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মা’য়ের চিৎকারে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে বিকাল সাড়ে চারটায় তার মৃত্যু হয়।
শিরোনাম:
- আলুর দাম লাগামহীন ভোক্তার নাভিশ্বাস
- শীতে ফুটপাতে গরম কাপড় বিক্রির ধুম
- একটা সংস্কার কমিটি দিয়ে সংবিধান সংস্কার সম্ভব না: মির্জা ফখরুল
- নিখোঁজের ৩ দিন পর কপোতাক্ষ নদে মিলল বৃদ্ধার মরদেহ
- কৃষ্ণনগরে আরাফাত কোকো স্মৃতি ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন রতনপুর
- পাখির সাথে মানুষের ভালোবাসার গল্প !
- সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখবে বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
- যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সংস্কার ও উন্নয়ন পরিষদের পক্ষে ২৭টি মনোনয়নপত্র ক্রয়