বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের চৌগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মোস্তানিছুর রহমান ও সাবেক চেয়ারম্যান এসএম হাবিবুর রহমান। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তারা দুইজন মুখোমুখি হয়েছিলেন। নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়েছিলেন ড. মোস্তানিছুর রহমান। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তারা মুখোমুখি হয়েছেন। দুইজন নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা জমা দিয়েছেন। হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মোস্তানিছুর রহমানের সম্পদ বেড়েছে। আর সম্পদ কমেছে এসএম হাবিবুর রহমানের। তবে নগদ টাকা বেশি এসএম হাবিবুর রহমানের।
ড. মোস্তানিছুর রহমানের এবারের হফলনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, নগদ টাকা রয়েছে ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার ৩২০ টাকা, ব্যাংকে ৫০ হাজার টাকা, ৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য, অন্যান্য সম্পদ রয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৯৬ টাকা এবং ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪২০ টাকা বাড়ি রয়েছে তার। দুই ব্যাংকে ২৭ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। বেতন ভাতাদি বাবদ তার বর্তমান বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৮ লাখ ৯৪ হাজার ৫৫৯ টাকা। পরনির্ভরশীলের আয় ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫৬১ টাকা।
২০১৯ সালে ড. মোস্তানিছুর রহমানের নগদ টাকা ছিল ৫০ হাজার। সঞ্চয়পত্র ছিল ৮ লাখ টাকার ও ২ লাখ ৫ হাজার ৬২৬ টাকার বীমা ছিল তার নামে। বেতন ভাতাদি বাবদ তার বাৎসরিক আয় ছিল ৫ লাখ টাকা। কৃষিখাত থেকে ২০ হাজার, বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য আয় ছিল ৫৮ হাজার ২০০। এছাড়া সম্পদ হিসেবে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য, ১০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪২০ টাকার বাড়ি রয়েছে।
এদিকে, ২০১৯ সালের হলফনামায় স্ত্রীর নামে কিছু না থাকলেও ২০২৪ সালে এসে পঞ্চাশ লক্ষাধিক টাকার মালিক হয়েছেন মোস্তানিছুর রহমানের স্ত্রী। তার কাছে নগদ টাকা রয়েছে ৩১ লাখ ৯৭ হাজার ৯৭১ টাকা। ব্যাংকে ৫০ হাজার। এক লাখ ৯৫ হাজার ৬৯৩ টাকার শেয়ার ও ২০ ভরি স্বর্ণ, ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রি, ২০ হাজার টাকার আসবাব এবং অন্যান্য ২ লাখ ১৬ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে। পাশাপাশি স্ত্রীর নামে ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকার জমি ক্রয় করেছেন।
অপর প্রার্থী চৌগাছা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান ২০২৪ সালের হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, বাৎসরিক আয় কৃষিখাত থেকে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা, ভাড়া বাবদ আয় ৭ লাখ ২০ হাজার, ব্যবসায় থেকে ৭৪ লাখ ৬২ হাজার ১১৩ টাকা, পরনির্ভরশীলের আয় ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার কাছে ১০ লাখ টাকা নগদ, ব্যাংকে জমা রয়েছে ৫ লাখ ১ হাজার টাকা। ১২ লাখ টাকার জিপগাড়ি, নিজ নামে ৩ ভরি ও স্ত্রীর নামে ৫ ভরি স্বর্ণ, নিজ নামে ২ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, স্ত্রীর নামেও ২ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক, নিজ নামে এক লাখ টাকা আসবাব ও স্ত্রীর নামে ৭০ হাজার টাকার আসবাবপত্র, নিজ নামে সাড়ে ৬ একর কৃষি জমি, নির্ভরশীলের নামে ৩ একরের বেশি কৃষি জমি, নিজ নামে সাড়ে ১১ শতক অকৃষি জমি, স্ত্রীর নামে ১২ শতক জমি ও ঢাকায় ফ্লাট, নিজ নামে চৌগাছায় দুটি বাড়ি রয়েছে তার।
২০১৯ সালের নির্বাচনী হলফনামায় এসএম হাবিবুর রহমান উল্লেখ করেন তার বাৎসরিক আয় কৃষিখাত থেকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা, পরনির্ভরশীলের আয় এক লাখ টাকা, ব্যবসা থেকে ৮৪ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮ টাকা, স্ত্রী-পুত্রের আয় ১২ লাখ টাকা, বেতন ও সম্মানিভাতা ৬ লাখ টাকা ছিল। তার কাছে ৮৪ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮ নগদ টাকা, স্ত্রীর কাছে এক কোটি ১১ লাখ ৫৮ হাজার ২৩ টাকা, পরনির্ভরশীলের কাছে ৭১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ছিল। ব্যাংকে জমা ৭ লাখ টাকা ছিল। স্ত্রীর নামে ৫ তোলা ও পরনির্ভরশীলের নামে ১৫ তোলা স্বর্ণ ছিল। নিজ নামে সাড়ে ৬ একর কৃষি জমি, নির্ভরশীলের নামে ৩ একরের বেশি কৃষি জমি, নিজ নামে সাড়ে ১১ শতক অকৃষি জমি, স্ত্রীর নামে ১২ শতক জমি ও ঢাকায় ফ্লাট, নিজ নামে চৌগাছায় দুটি বাড়ির তথ্য উল্লেখ করা হয়।
আগামী ২১ মে চৌগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।