বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ইমতিয়াজ আহমেদ জাবেরের কবর জিয়ারত ও তার পরিবার সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম। শনিবার দুপুরে ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের দেউলি গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ান যশোরের নবাগত জেলা প্রশাসক।
এ সময় জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম শহিদ জাবেরের পিতা নওশের আলী ও তার মা শিরিনা খাতুনকে সান্তনা দিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নির্দেশে আমরা এসেছি। তিনি বলেন, জাবেরের আত্মাহুতির মাধ্যমে আমরা নতুন স্বাধীনতা অর্জন করেছি। জাবের নেই কিন্তু সরকার ও প্রশাসন আপনাদের পাশে আছে এবং থাকবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন, যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস. এম. শাহীন, ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভূপালী সরকার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে. এম. মামুনুর রশীদ, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর আবদুল আহাদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা সমন্বয়ক রাশেদ খান।
সাক্ষাৎকালে শোকসন্তপ্ত পিতা-মাতা শহিদ জাবেরের বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে তার জীবনের নানা আলেখ্য তুলে ধরেন। এসময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শহিদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ স্থানীয় জেডিপিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবি তুলে ধরেন। এছাড়া হাড়িয়া দেয়াড়া সড়কটি শহিদ জাবের সড়ক নামকরণের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
শহিদ পরিবারের সকল দাবি অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেয়ার পাশাপাশি জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হয়েছেন জাবের। তার পিতা-মাতা একজন জাবেরকে হারিয়েছেন। আমরা সকলে লক্ষ লক্ষ জাবের হয়ে এই পরিবারের কাছে ফিরে আসবো।’ পরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শহিদ জাবেরের কবর জিয়ার করেন জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, সাক্ষাৎকালে শোকসন্তপ্ত পরিবারের কাছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ আর্থিক অনুদান হস্তান্তর করা হয়। গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যশোর জেলা থেকে যারা শহিদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাতের পাশাপাশি সকল ধরনের সহযোগিতা নিয়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন নবযোগদানকৃত জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে ঝিকরগাছা উপজেলার ৯নং হাজিরবাগ ইউনিয়নের দেউলি গ্রামে নওশের আলি ও শিরিনা খাতুন দম্পতির ঘরে জন্ম নেন ইমতিয়াজ আহমেদ জাবের। গত ১৯ জুলাই ২০২৪ বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টায় রাজধানীর বনশ্রীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন জাবের। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে ২৬ জুলাই ২০২৪ তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন। তিনি ঢাকার সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ৩য় সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন।
##