বাংলার খেলা ডেস্ক
বাফুফে ভবনে ক্যাম্পেই বেশির ভাগ সময় কাটে তাঁদের। বসবাস সেখানেই। নিয়মতান্ত্রিক জীবন। ঘড়ির কাঁটা ধরে ঘুম থেকে ওঠা, অনুশীলন ও জিম। এর পরপরই বাফুফে ভবনের তৃতীয় তলায় নিজেদের কক্ষে ঢুকে পড়া। প্রতিদিন প্রায় একই রকম। এমন জীবনে কয়েক দিনের ছুটিটা যে কী জিনিস, সেটি খুব ভালো করেই অনুভব করেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এ মাসের শুরুতে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের পর ১৫ দিনের ছুটি মিলেছে। ছুটির এই সময়ে নিজ বাড়িতে আনন্দময় সময় কাটাচ্ছেন তাঁরা।
পরিবারের ভালোবাসামাখা ছুটির এ সময়টা প্রাণভরেই উপভোগ করেছেন সাবিনা, সানজিদা, মাসুরারা। পিঠাপুলি আর বাড়ির মজাদার রান্নার আকর্ষণ ছুটির এই দিনগুলোতে ছিল তাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। কিন্তু নিজেদের কাজটাও ভোলেননি কেউই। ছুটির সময় নিজ নিজ এলাকায় পারিবারিক আবহের মধ্যে থেকেও তাদের মাথায় ছিল ফুটবল, সচেতন ছিলেন নিজেদের ফিটনেস নিয়ে। নিজেদের ভবিষ্যতের পারফরম্যান্স নিয়ে।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোচ সাইফুল বারী ব্যাপারটা নিয়ে একেবারেই নির্ভার, ‘দলের প্রত্যেক সদস্যই সচেতন। ছুটির সময় আমরা ওদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলাম। জানি, ওরা সেগুলো অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। এটা ঠিক, পারিবারিক আবহে কিছুটা নিয়মের বাইরে সবাইকে যেতেই হয়। ব্যাপারটা মাথায় রেখেই ওদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি আমরা।’
ছুটির সময় নারী ফুটবলারদের কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা ছিল। প্রতিদিন হালকা ট্রেনিং, এরপর রিকভারির নিয়মকানুন মেনে চলতে বলা হয়েছিল। বাড়িতে গেলে এটা যে প্রতিদিন ঘড়ি ধরে করা সম্ভব হবে না, টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায় ছিল সেটাও। দু-এক দিন যদি কোনো কারণে ট্রেনিংটা তারা করতে না পারেন, তাহলে তাদের বলে দেয়া হয়েছিল রানিংয়ের কথা, ‘বাড়িতে গ্যাপ হতেই পারে। আমরা বলে দিয়েছি গ্যাপ হয়ে গেলে সুযোগ পেলেই ৩০ থেকে ৪০ মিনিট রানিং করার কথা। আমার সঙ্গে ওদের ছুটির এ সময়টায় কথা হয়নি, তবে মেয়েরা খুবই ডিসিপ্লিনড। তা ছাড়া ওরা নিয়মতান্ত্রিক জীবনে অভ্যস্ত। নিজেদের ফিটনেস নিয়ে ওরা সব সময়ই ভাবে।’ জানালেন নারী দলের কোচ।
জাতীয় দলের রক্ষণভাগের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মাসুরা সাতক্ষীরার মানুষ। সেখানে বিলিপুতা ইউনিয়নে তাঁর গ্রামের বাড়ি। ডিসেম্বরের ঢাকায় সেভাবে শীত না পড়লেও সাতক্ষীরায় নাকি প্রচণ্ড ঠান্ডা, ‘এখানে খুব শীত। আমার আবার ঠান্ডাও লেগে গেছে। তাই একটু নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলাম। তারপরও বাড়ির পরিবেশই তো অন্য রকম। সময়টা দারুণ কাটছে। অনেক দিন পরপর বাড়িতে আসি, সময়টা পরিবারকেই দিতে চাই।’
মাসুরা ছুটিতে নিয়মিতই জিমে গেছেন। যদিও সেটি তাঁর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই, ‘অটোরিকশায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগে সেখানে যেতে। তবুও গেছি। ফিটনেসটা তো ধরে রাখতে হবে। বাড়িতে এলে এমনিতেই খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়। মা অনেক কিছু রান্না করেন। এ ছাড়া হালকা রানিং করেছি।’
অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এবার বাড়ি ফিরে সাতক্ষীরায় নিজের ফুটবল একাডেমিতে সময় দিয়েছেন, ‘বাচ্চারা আমার অপেক্ষায় থাকে। আমি গিয়ে ওদের সময় দিয়েছি। একটা প্রতিযোগিতার মতো আয়োজন করেছিলাম। সেখানে পুরস্কার হিসেবে আমার কয়েকটা জার্সি ওদের দিয়েছি। সময়টা মোটের ওপর দারুণ কেটেছে। পরিবারের সঙ্গে কাটানো সময় তো মধুরই।’
ফিটনেস নিয়ে সাবিনার কথা, ‘ছুটির আগে আমাদের কিরণ আপা (নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ) কিছুটা দ্বিধায় ভুগছিলেন। তিনি ১০ দিনের বেশি ছুটি দিতে চাননি। তাঁর শঙ্কা ছিল বাড়িতে ছুটি কাটাতে গিয়ে মেয়েরা সবাই ওজন বাড়িয়ে ফিরবে। আমরা তাঁকে কথা দিয়েছিলাম অমনটা হবে না। তাই তিনি ১৫ দিনের ছুটি দিতে রাজি হয়েছিলেন। আমরা সবাই জানি, কী করতে হবে। প্রত্যেক নারী ফুটবলারের মাথায় ফিটনেসের ব্যাপারটা ঢুকে গেছে।’
ছুটি শেষে আগামীকাল ২১ ডিসেম্বর ক্যাম্পে ফিরছেন মেয়েরা। ভালোবাসার ফুটবলকে যে অনেক কিছুই দেয়ার বাকি তাঁদের।
শিরোনাম:
- গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জেকে বসেছে শীত
- পুনশ্চ’র ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
- শীতে বাড়ছে রোগীর চাপ নাজুক চিকিৎসা সেবা
- মাগুরায় পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
- যশোরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষায় সভা
- সাজা শেষে দেশে ফিরলেন ২ ভারতীয়
- শালিখার চিকিৎসা নিতে আসা অজ্ঞাত বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার
- বিশ্ব ইজতেমায় হামলার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ