নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ আসনে জাতীয পার্টি মনোনীত প্রার্থী এড. জহুরুল হকসহ সাতজনের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাইয়ে বৈধ হিসেবে গণ্য হয়েছে।
জহুরুল হকের মনোনয়নপত্রের বৈধতায় যশোর-৪ নির্বাচনী এলাকায় তার দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থকরা ছাড়াও সাধারণ ভোটাররা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনী এলাকা অভয়নগর-বাঘারপাড়া ও বসুন্দিয়া ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীরা উল্লাস করেন।
রোবার যশোর জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়ন বাছাই শেষে এই আসনে বিভিন্ন দলের আরও পাঁজনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছ। তবে স্বতন্ত্র এক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরে ত্রুটি থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সচিব সন্তোষ অধিকারীর মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার।
বৈধ অন্য প্রার্থীরা হলেন, যুদ্ধাপরাধ মামলায় দণ্ডিত বাঘারপাড়ার আমজাদ মোল্যার মদদদাতা হিসেবে পরিচিত নানাভাবে সমালোচিত ও বিতর্কিত বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় (স্বতন্ত্র), তৃণমূল বিএনপির লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) এম সাব্বির আহমেদ, জাকির পার্টির লিটন মোল্যা, বাংলাদেশ জাতীয় আন্দোলনের সুকৃতী কুমার মন্ডল ও ইসলামী আন্দোলনের ইউনুস আলী।
যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রোববার সকালে জেরার ছয় আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য মতে, যশোর-৪ আসনে জাতীয় পার্টিও মনোনীত প্রার্থী এড. জহুরুল হক ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী দলটির অভয়নগর উপজেলার সভাপতি ও নওয়াপাড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র এনামুল হক বাবুলসহ অন্য পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করেন। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী সন্তোষ অধিকারীর মনোনয়নপত্রে ভোটারের স্বাক্ষরে ত্রুটি থাকায় সেটি বাতিল করা হয়।
সকালে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়ন বাছাইকালে জহুরুল হকের সাথে দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আজিজুর রহমান, বাঘারপাড়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক সোলায়মান বিশ^াস, যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, জেলা জাপার সাবেক দপ্তর সম্পাদক মনিরুজ্জামান হিরণ, যুবনেতা আলী হোসেন প্রমুখ।
মনোনয়ন যাচাই বাছাইকালে নৌকার প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের সঙ্গে ছিলেন অভয়নগর উপজেলা আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান সরদার অলিয়ার রহমান, সিনিয়র সহসভাপতি ও অভয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর, সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বিশ্বাস, আব্দুল গণি মোড়ল, আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নওয়াপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি গাজী নজরুল ইসলাম, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত দাস শান্ত, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আরশাদ পারভেজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ আইয়ুব হোসেন, মহিউদ্দিন আহমেদ, বিকাশ রায় কপিল, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান মোল্যা, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, হাবিবুর রহমান বাপ্পী, সহসম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুর রউফ মোল্যা, নওয়াপাড়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, রাজঘাট-নওয়াপাড়া শিল্পাঞ্চল শাখা শ্রমিকলীগের সভাপতি ফারাজী নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রবিন অধিকারী ব্যাচা।
সকাল থেকে জেলা প্রশাসনে নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন সেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আসলাম হোসেন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক সফি কামাল, তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এম আজিম উদ্দিন, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খানম, জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও মহিলা সম্পাদিকা লায়লা খাতুন, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মুন্সি আব্দুল মাজেদ, সাধারণ সম্পাদক তাপস ফারাজী।
আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কবির হোসেন জনি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান কুদ্দুস, দপ্তর সম্পাদক গোলাম জহিরুল হক লিখন, প্রচার সম্পাদক শাহ্ আব্দুল মুকিত জিলানী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান তারু, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, ইউপি চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান, হাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন, পৌর প্যানেল মেয়র মিজানুর রহমান মোল্যা, পৌর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, পৌর কাউন্সিলর তানভীর হোসেন তানু, মোস্তফা কামাল, শেখ আব্দুল সালাম, রিজাউল ইসলাম রেজা ফারাজী, বিপুল শেখ, মিজানুর রহমান।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জন্য সর্বস্তরের নেতারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন জেলা প্রশাসন প্রাঙ্গণে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শাহ্ খালিদ মামুন, যুগ্ন আহ্বায়ক কাজী আহাদুর রহমান মামুন, জসিম উদ্দিন, রওশন কবির টুটুল, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান গাজী, যুগ্ন আহ্বায়ক বিল্লাল আহমেদ বাবু, শেখ জাকির হোসেন, তরুণলীগের আহবায়ক বেল্লাল হোসেন বকুল, পৌর সেচ্চালীগের সভাপতি মেহেদী রাজন, সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান মিলন, সাধারন সম্পাদক সাব্বির আহমেদ শান্তসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
এ দিকে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে সন্তোষ অধিকারী জানান, আমার মনোনয়নের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন কমিশনে আপিল করব।
মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে বৈধ ঘোষণার পর সাংবাদিকদেও প্রতিক্রিয়া জানান জাতীয় পার্টিও প্রার্থী জহুরুল হক। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যশোর-৪ আসনের মানুষ একজন বিতর্কিত ও সমালোচিত সংসদ সদস্য ও তার পোষ্য বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছে। তারা পরিবর্তন করতে চায়। তাই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয় জাতীয় পার্টিও ঘরেই যাবে ইনশাআল্লাহ।
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক বাবুল বলেন, যশোর-৪ আসনের মানুষ পরিবর্তন চায়। এই পরিবর্তন এবং এলাকার উন্নয়নের জন্য আমি নির্বাচিত হলে যা যা করা প্রয়োজন তাই করব। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।