এস এম জালাল
সাবিরা নাজমুল মুন্নী। ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। বর্তমানে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি। রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী স্বামী নাজমুল ইসলাম গুম খুনের পর গৃহিণী থেকে হয়ে ওঠেন রাজনীতিবিদ। আন্দোলন, সংগ্রাম ও মাঠের রাজনীতিতে ত্যাগী নেত্রী হিসেবে ইতিমধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে লড়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন মুন্নী। সুনামের সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। একই সঙ্গে হাল ধরেছেন উপজেলা বিএনপির। দলের তৃণমূল থেকে হাইকমাণ্ড পর্যন্ত গড়ে তুলেছেন নিবিড় সম্পর্ক। জনপ্রতিনিধি ও নেতা হিসেবে মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন তিনি। আগামী সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে দুই উপজেলার মানুষের ভালবাসায় বিজয় উপহার দিতে পারবেন বলেও আশাবাদী তিনি।
ঝিকরগাছা-চৌগাছা দু’টি উপজেলা নিয়ে যশোর-২ আসন গঠিত। দুই উপজেলা থেকেই রাজনীতিবিদরা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা করেন। দেশ স্বাধীনের পর এই আসন থেকে এবারও বিএনপির একমাত্র নারী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঝিকরগাছা বিএনপির সভাপতি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নী। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রতিনিয়ত সভা, সমাবেশ, উঠান বৈঠক করে ভোটারদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছেন তিনি।
সাবিরা নাজমুল মুন্নীর স্বামী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম ছিলেন জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও ঝিকরগাছা বিএনপির সভাপতি। ২০১১ সালে ঢাকা থেকে অপহরণের পর খুন হন তিনি। তার মৃত্যুর পর গৃহিণী থেকে রাজনীতিতে প্রকাশ্যে আসেন উচ্চ শিক্ষিত সাবিরা নাজমুল মুন্নী। আওয়ামী শাসন আমলেও উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে তিনি এ অঞ্চলের মানুষের কাছে পরীক্ষিত নেত্রী হিসেবে পরিচিত।
জানতে চাইলে সাবিরা নাজমুল মুন্নী বলেন, ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত আছি। বিগত আওয়ামী স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে থেকে নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জীবনকে বাজি রেখে সকল অপশক্তির মোকাবেলা করে দলকে শক্তিশালী করেছি। দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে ঝিকরগাছা-চৌগাছাকে আরো উন্নত করতে সক্ষম হব।
সাবিরা নাজমুল মুন্নী বলেন, স্বামী (নাজমুল) ছিলেন ঝিকরগাছার গণমানুষের নেতা। শুধু বিএনপি করার কারণে সন্ত্রাসীরা নাজমুলকে অপহরণের পর খুন করে। তিনি বলেন, জীবনের মধ্যমণিকে হারিয়ে জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বেঁচে আছি। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে আছি। মানব কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন দাবি করছি। দল যোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আশাবাদী।
তিনি বলেন, স্বামীর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে নেতাকর্মীদের কাছে ছুটছি। নিজের যোগ্যতা আর স্বামীর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ঝিকরগাছাবাসীর মন জয় করেছি। বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ।
সাবিরা নাজমুল মুন্নী বলেন, জনগণের যেকোন সমস্যা শুনছি এবং তা সমাধান করার চেষ্টা করছি। তাদের পাশে থাকছি, তাদের চাওয়া এবং প্রত্যাশা পূরণে সর্বদা সচেষ্ট ভূমিকা রেখে চলেছি। জেল খেটেছি। ছয় বছর সাজা হয়েছে। রাজনীতির করার কারণে ১৪টি মামলার আসামি হয়েছি। প্রতিকূল পরিবেশে সব সময়ই রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি।’
সাবিরা নাজমুল মুন্নি বলেন, বিএনপি ঝিকরগাছা-চৌগাছায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এবং সেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। গণসংযোগ, নবীন প্রবীণদের মতামত নির্বিশেষে ভোটারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছি, সেই বিবেচনায় আগামীতে মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করছি। ধানের শীষের মনোনয়ন পেলে অবশ্যই জয়লাভ করবো।