♦৯ সদস্যের কমিটির ৫জনই ভুয়া
♦ জেলা সমবায় কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের ৯ সদস্য বিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে নজিরবিহীন জালিয়াতি করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র। সমিতির সাধারণ সদস্য না হয়েও সভাপতি, সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি পদ দখল করেছেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বও আবুল কালাম ও বর্তমান মেম্বর মফিজুর রহমানসহ পাঁচজন। জালিয়াতির মাধ্যমে গঠিত নির্বাহী কমিটি বাতিল ও ভুয়া সদস্যদের ছাটাই করার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার জেলা সমবায় কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাধারণ সদস্যরা।
ইসলাইল হোসেন, সামছুর রহমান, কাশেম আলীসহ ১০ শতাংশ সাধারণ সদস্য স্বাক্ষরিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৮২ সালে শিমুলিয়া মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড গঠিত হয়। সর্বশেষ ২০২২-২০২৩ অডিট রিপোর্ট ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ অনুযায়ী সমিতির সাধারণ সদস্য সংখ্যা ১৪২ জন। এই ১৪২জন সদস্য তালিকায় নাম না থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে ৯ সদস্যের নির্বাহী কমিটির সভাপতি, সম্পাদকসহ ৫টি পদ বাগিয়ে নিয়েছেন প্রভাবশালী চক্র। সমিতির সর্বশেষ ভোটার তালিকা/সদস্য তালিকা অনুযায়ী ১১৫ নম্বর সদস্য শিমুলিয়া গ্রামের তক্কেল বিশ^াসের ছেলে মো আবুল কালাম। অথচ তার সদস্যপদের স্থলে জালিয়াতি করে নিজের নাম বসিয়েছেন বর্তমান সভাপতি দাবিদার গোপীনাথপুর গ্রামের দাউদ মোড়লের ছেলে সাবেক ইউপি মেম্বর আবুল কালাম। তিনি সমিতির সাধারণ সদস্য না হলেও কিভাবে কমিটির সভাপতি হলেন সেটি সাধারণ সদস্যরা জানেন না।
ভোটার তালিকার ১৩৫ নম্বর সদস্য শিমুলিয়া গ্রামের রজব আলী ছেলে মফিজুর রহমান । অথচ তার সদস্যপদের স্থলে জালিয়াতি করে নিজের নাম বসিয়েছেন বর্তমান সম্পাদক দাবিদার আজমপুর গ্রামের আয়নাল বিশ^াসের ছেলে ও বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মো. মফিজুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক দাবি করা মো. মফিজুর রহমান সাধারণ সদস্যই নয়। ভোটার তালিকার ৯০ নম্বর সদস্যের স্থলে টেম্বারিং (সদস্যের নাম মুছে হাতে লেখা) করে সহ-সভাপতি দাবিদার আনারুল ইসলামের নাম বসানো হয়েছে। যা ভোটার তালিকা/সদস্য তালিকায় স্পষ্ট।
ভোটার তালিকার ৩৩ নম্বর সদস্যের স্থলে টেম্বারিং (সদস্যের নাম মুছে হাতে লেখা) করে মো. খালিদ মোশারফের নাম বসানো হয়েছে । যা ভোটার তালিকা/সদস্য তালিকায় স্পষ্ট। তিনি সাধারণ সদস্য না হলেও ওই চক্রটি জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে নির্বাহী কমিটির পদে বসিয়েছেন। সমিতির সর্বশেষ ভোটার তালিকায় মোট সদস্য সংখ্যা ১৪২। এই তালিকায় মোঃ আব্দুল হামিদের নাম নেই। তবুও তাকে নির্বাহী কমিটির সদস্য দেখানো হয়েছে।
নির্বাহী কমিটির পাঁচ জন সমিতির সাধারণ সদস্যই নয়। অথচ তারা ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা/সদস্য তালিকায় প্রকৃত সদস্যদের নামের জায়গায় ওই পাঁচজন নিজেদের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা ও ছবি জালিয়াতি করে নির্বাহী কমিটি নির্বাচন দেখিয়েছেন; যা সম্পূর্ণ অবৈধ। প্রকৃত সদস্যদের কাছে তথ্য গোপন করে কতিপয় সদস্যের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সমিতির ক্ষমতা কুক্ষিগত করা হয়েছে। এই অবৈধ নির্বাহী কমিটির ওই সদস্যদের কার্যকলাপে সাধারণ সদস্যরা তাদের অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে অবৈধ নির্বাহী কমিটি বাতিল ও ভুয়া সদস্য ছাঁটাই করার জন্য আবেদন করা হয়েছে।