বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের আবেদন করেছেন দুই উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ ৫২ নেতা। গত ১০ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর তারা এ আবেদন করেন। চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত আবেদন পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সমূহের নেতাদের পক্ষে যশোর-২ আসনে প্রাথমিকভাবে ঘোষিত প্রার্থী পরিবর্তনে পুনঃবিবেচনা করার আবেদন জানাচ্ছি। অনুরূপ আবেদন করেছেন ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ নিপুন। তিনি এই আসনে নিজেই মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
চৌগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের ২৭ জন নেতার স্বাক্ষরিত আবেদন জমা দিয়েছি। কারণ যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে তার সাথে দলের নেতাকর্মী ও জনগণ কারো সাথে সম্পর্ক নেই। গত ১৭ বছর বিপদে কোন খোঁজ খবর নিতেন না। মামলা হামলায় কখনো পাশে দাঁড়াননি। এমনকি আন্দোলন সংগ্রাম এগিয়ে নিতেও তার কোন ভূমিকা ছিলো না। এমন প্রার্থীর পক্ষে কর্মীদের মাঠে নামানো কঠিন। তিনি আরো বলেন, আমাদের কোন পছন্দের প্রার্থী নেই। দলের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখা যে নেতাকেই মনোনয়ন দেয়া হোক তার পক্ষে আমরা নির্বাচন করবো।
ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমরান সামাদ নিপুনও আবেদন জানানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৫জন নেতা প্রার্থী পুনঃবিবেচনার আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন। আমরা মনে করছি জামায়াতের প্রার্থীর বিপরীতে ভাবীকে (সাবিরা সুলতানা) বিজয়ী করা অসম্ভব। তার জনপ্রিয়তার বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা নতুন প্রার্থী প্রত্যাশী।
গত ৩ নভেম্বর সারাদেশে প্রার্থীদের প্রাথমিক নাম ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই দিন যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে সাবিরা নাজমুল মুন্নিকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক অর্থ সম্পাদক প্রয়াত নাজমুল ইসলামের স্ত্রী ও ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি। ২০১৪ সালে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ব্যাপারে সাবিরা নাজমুল মুন্নি জানান, দল প্রাথমিকভাবে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন চূড়ান্তভাবে প্রার্থী বদল হতে পারে। যে কারণে তারা চেষ্টা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে সাবিরা নাজমুল মুন্নীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে উপজেলা বিএনপির বৃহৎ একটি অংশের নেতা-কর্মীরা। তারা বলছেন, এ আসনকে পুনরুদ্ধার করতে হলে অবশ্যই তাকে বাদ দিয়ে নতুন প্রার্থী দিতে হবে। তা না হলে এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ডা. মোসলেহ উদ্দীন ফরিদ বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার আশংকা রয়েছে।
যশোর-২ নির্বাচনের ইতিহাস সূত্রে জানা যায়, এ আসন থেকে বিএনপি ১৯৯৬ সালে একবার জয় লাভ করেছে। তারপর থেকে আর কখন বিএনপি জয়লাভ করেনি। তবে ১৯৮৬ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ১০ বার জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপি একবার, জাতীয় পার্টি একবার, আওয়ামী লীগ ৬ বার, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী দুই বার জয়লাভ করেছে। ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলার বিএনপির প্রথম সারির তিনজন নেতা বলেন, বরাবর নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপি বঞ্চিত হয়েছে। সাবিরা নাজমুল মুন্নীকে প্রার্থী করায় আবারও বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে শতভাগ। আমরা চাই মনোনয়ন পরিবর্তন করে পুরুষ প্রার্থীকে দেয়া হক।
