সুমন ব্রহ্ম, নিজস্ব প্রতিবেদক:
ডুমুরিয়া উপজেলার রামকৃষ্ণপুর পশ্চিমপাড়া সরকাফর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানা সংকট নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিদ্যালয়টিতে নেই ক্লাস করার মত কোন ভবন। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা যেখানে ক্লাস করছে সেটি জরাজীর্ণ একটি টিনের ছাবড়া। শুধু তাই নয় সেই টিনের ঘর ঠিকমত ঘেরাও নেই। নেই ব্লাক বোর্ড টানানোর কোন ব্যবস্থা। একপাশে ক্লাস নিলে পাশের ঘর থেকে শোনা ও দেখা যায়। ফলে সঠিক ভাবে শিক্ষা নিতে পারছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ১৯৯৩ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের তত্ত¦াবধানে ৪ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি একতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে। তখন থেকেই বিদ্যালয়ের পাঠদান সহ সকল কার্যক্রম ওই ভবনেই চলছিল। গত ২০২১ সালে ভবনটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে। পরবর্তীতে ক্ষুদ্র মেরামত প্রকল্পের টাকা দিয়ে সীমানা প্রাচীরের সাথে টিন দিয়ে নির্মাণ করা হয় তিনটি টিনের ঘর। বর্তমানে সেই টিনের ঘরগুলোর অবস্থা একেবারে জরাজীর্ণ। বিদ্যালয়টির মাঠে জমে আছে কাদা ও পানি।
স্থানীয় কয়েক জন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন এইরকম একটা টিনের ঘরে ছেলে মেয়েদের পাঠাতেও ভয় হয়। এখন ঝড় বৃষ্টির মৌসুম একটু ঝড় হলেই কখনযে ভেঙে মাথার উপর পড়ে সেই চিন্তায় থাকি। পাশাপাশি অতি দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য কতৃপক্ষের কাছে দাবিও জানান। স্কুল সূত্রে আরো জানাযায় বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন গোলপাতার ছাউনি দিয়ে প্রথম ক্লাস শুরু হয়। বিদ্যালয়টি ১৯৮০ সালে রেজিন্ট্রেশন পায়। পরবর্তীতে ১৯৯২/৯৩ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী কতৃক একতলা ভবন নির্মিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে দেড়শতাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বিদ্যালয়টির অবস্থা এমন করুণ হওয়ার কারণে ছাত্র ছাত্রী অন্যত্র চলে গেছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে গরমে ক্লাস করতে কষ্ট হয়। খেলাধুলা করার মত কোন জায়গা নেই, যে মাঠ রয়েছে একটু খানি বৃষ্টি হলেই মাঠে কাদা পানি জমে থাকে বলে জানায়
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কাদেরুন্নেছা বেগম অভিযোগ করে বলেন টিনের ঘরের উপরের টিন ফাকা থাকার কারণে ভিতরে সূর্যের তাপ পড়ে। ছেলে মেয়েরা সব ছটফট করে এই অবস্থায় ক্লাস কিভাবে নিবো। ছেলে মেয়েরাতো গরমে ক্লাসে বসতে পারেনা কিভাবে তাদেরকে শিখাবো।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক পবিত্র কুমার বালা বলেন সহকারী শিক্ষকরা আমাকে বলে তাদের ক্লাস নিতে কষ্ট হয়। এখন ঝড় বৃষ্টির সময় ভারি বৃষ্টি হলে ওখানে আর ক্লাস করা সম্ভব হবেনা। আমাদের অফিস করার জায়গা নেই তাই পরিত্যাক্ত ভবনে অফিস করি। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অনুপম রায় বলেন গরমে অনেক শিশু অসুস্থ হয়েছে। খেলা করারও পরিবেশ নেই একটু বৃষ্টিতে পানি জমে মাঠে রয়েছে গর্ত। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের কাছে আবেদন করেছি নতুন ভবনের জন্য কিন্তু আজ পর্যন্ত কতৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাইমারি) হাবিবুর রহমান বলেন বিষয়টা কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে অতিদ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল – আমিন মানবজমিনকে বলেন যাহাতে ওখানে দ্রুত একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা যায় তার জন্য কতৃপক্ষের সাথে কথা বলবো। পাশাপাশি বর্তমান অবস্থার খোজ নিয়ে আশু কোন ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হলে সেটা করা হবে।