স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ
প্রচন্ড তাপদাহে যশোরের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। দিনের শুরুতে সূর্যের প্রখর উত্তাপে কর্মব্যস্ত মানুষের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে দিন পার করছে শ্রমজীবী, দিনমজুর মানুষেরা। তবে, চাকুরিজীবীদেরও ভোগান্তির শেষ নেই। একদিকে প্রচন্ড গরম অন্যদিকে ঈদের ছুটি শেষে মানুষের কাজে ফেরার ব্যস্ততায় শহরে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। আবার তাপদাহে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরের নিচে নেমে গেছে। শহরের অধিকাংশ টিউবওয়েলে সুপীয় খাবার পানি মিলছে না। গরমে স্বস্তির আশায় ঘর থেকে বেরিয়ে গাছের ছায়ার নিচে আশ্রয় নিচ্ছে শিশু বৃদ্ধ সবাই। গরমে ঠান্ডা ও পানি জাতীয় খাবারের চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত গরমের ফলে ডায়রিয়াসহ নানাবিধ রোগে অসুস্থ হচ্ছেন মানুষ। বয়স্ক ও শিশুদের ডায়রিয়া ও পানিশূন্যতা রোগ বেশি দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার দিনভর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কাজের জন্য ঘর থেকে বের হওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা প্রচন্ড রোদের তাপে নেজেহাল হয়ে পড়েছে। রিকসা, ইজিবাইক, ভ্যানগাড়ি রাস্তার পাশে রেখেই চালক ছায়ায় বিশ্রাম নিচ্ছেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্পট যেমন, নিউমার্কেট এলাকা, হাসপাতাল মোড়, দড়াটানা, কোর্ট মোড়, চিত্রার মোড়, মনিহার এলাকাসহ বেশ কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে। প্রচন্ড রোদের তাপে যানজট বাড়তি ভোগান্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিন বিকেলে কালেক্টরের চত্ত্বরে দেখা গেছে, গাছের ছায়ায় পরিবার, স্বজন নিয়ে বসে আছেন কর্মব্যস্ত মানুষ। প্রচন্ড রোদের তাপে স্কুল ব্যাগ কাঁধে উদাস দুপুরে নিশ্চুপ ডিসি পুকুরের কোণে বসে আছে বালকেরা। আবার কেউ কেউ গরমে একটু স্বস্তির জন্য ঠান্ডা মাঠা, আনারস, শরবত খেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সব মিলিয়ে বৈখাশের শুরুতেই প্রচন্ড তাপদাহে চরম বিপাকে যশোরের জনজীবন।
এদিকে যশোরের আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার যশোরের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
প্রচন্ড তাপদাহের বিষয়ে মজনু হুসাইন নামে এক তরমুচ বিক্রেতা বলেন, আজ ক দিন খুব গরম পড়তেছে। ফল বেঁচতি বেঁচতি উঠে গাছের নিচে যেয়ে দাঁড়াতি হচ্ছে। খুব গরম! গাঁ, মুখ পুঁড়ে যার মতন কান্ড। একটু গরম সহ্য করি। আমার কড়া পয়সা হোক ফল বেঁচে। গরমে ফলের খুব টান।
মতি মিয়া নামে এক রিকসা চালক বলেন, শহরে রিকসা চালানোর মত নেই। যে গরম পড়ছে তাতে মনে হচ্ছে রাস্তায় আগুন রাখা। পিচ জায়গায় জায়গায় গলে চাকার সাথে উঠে আসছে। সকালে ভোরে বের হলে গরম, রোদ কম থাকে। কিন্তু সে সময় তো ভাড়া হয়না। ভাড়া হয় অফিসের সময়ে। তখন রিকসা চালানোর মত অবস্থা থাকে না। আবার জায়গায় জায়গায় জ্যামে অনেক সময় আটকে থাকতে হয়। যাত্রী রোদে, তাপে কষ্ট পায়। রিকসার হুক নামিয়ে দিয়ে, আমার মাথার উপর ছাতা বেঁধে চালাচ্ছি।
আবুল কাশেম নামে এক পথচারি জানান, কাজের জন্য বাসা থেকে বের হতে হয়েছে। একদিকে খুব গরম। তার উপর লোডশেডিং হচ্ছে। বাজারের ভিতরে কেনা কাটা করাও কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।