মনিরুজ্জামান মনির
যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের বৈদ্যনাথতলা প্রাথমিক বিদ্যাললের সামনে সড়কের কালভার্ট ভেঙে পড়ে আছে দুই বছর ধরে। সংস্কার না করায় ভোগান্তিতে পড়ছে অন্তত ৪০ গ্রামের মানুষ। দ্রুত সংস্কারের দাবি এলাকাবাসীর। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংস্কার প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৈদ্যনাথতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সড়কের কালভার্টের ২ থেকে আড়াই ফুট নিচু হয়ে গেছে। কালভার্ট ধরে রাখার পিলার গুলো ভেঙে পড়েছে খালের মধ্যে। স্থানীয় লোকজন চলাচলের সুবিধার্থে ভাঙা কালভার্টের উপর ইটের খোয়া দিয়ে চলাচল করছে। ভাঙা কালভার্টের উপর দিয়ে পিকআপ, ট্রাক এবং গাছের গুড়ি বহনকারি করিমন গাড়ি চলাচল করছে। ঝুঁকিপূর্ণ চলাচলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। দুই বছরেও কালভার্ট সংস্কার না করায় ভোগান্তিতে পড়ছে ৪০ গ্রামের মানুষ।
উপশহর গ্রামের পথচারী আইনুল জানান, আমি যশোর-মাগুরা মেইন রোডে চলাচল করি না। এই সড়কে চলাচল করছি ঝুঁকি নিয়ে। আমাদের কিছু করার নেই। কারণ আমরা সবাই সহজ পথে চলতে চাই।
সালতা গ্রামের ইজিবাইক চালক মনিরুল ইসলাম জানান, নিয়মিত এ রোডে ইজিবাইক চালায়। ভালো ভাড়া হয়। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও আমরা বাধ্য হয়ে চলাচল করি।
একাধিক ইজিবাইক চালক জানান, এ রাস্তা দিয়ে দূরদূরস্তের মানুষ চলাচল করে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ চলাচল করে এ রাস্তা দিয়ে। ঝুঁকিপূর্ণ জানা শর্তেও আমারা চলাচল করছি। কারণ ৩ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যায়। তারপরেও এ রোডে প্রচুর ভাড়া হয়। আমি বারোবাজার ভাড়া নিয়ে গেছি। আবার অনেক সময় মহাসড়কে পুলিশে ঝামেলা করলে ঝুঁকি হওয়া সত্বেও সব ইজিবাইক এ ভাঙ্গা ব্রিজের উপর দিয়ে চলাচল করে। যে অবস্থায় আছে যখন তখন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
পাঁচবাড়িয়া গ্রামের শাহাদাত হোসেন জানান, জহুরপুর কালীগঞ্জ এবং মাগুরার মানুষ এই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত চলাচল করে। কয়েক বছর আগে কালভার্ট ভেঙে পড়েছে। নতুন করে তৈরি করার কোন খবর নেই। কিছুদিন আগেও এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। মালবাহী করিমন খালের ভিতরে পড়ে যায়। কালভার্টটি ভেঙে পড়ায় মেইন রোডের চাপ পড়বে বেশি। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক চলাচল করে। প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০টি গ্রামের লোকেরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। ১৯৮০ সালের দিকে নির্মাণ করা হয় এ কালভার্ট।
বৈদ্যনাথতলা প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গির আলম জানান, এ কালভার্ট ভেঙে পড়েছে প্রায় ২ বছর। আমি দেখছি কয়েকবার মাপ দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে যেতে। অথচ এখনও কোন কাজ হয়নি। এ রাস্তা দিয়ে ৫-৭টি ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করে। কারণ শহরে যাওয়ার সহজ পথ হলো এটা। আমার স্কুলে ১শ’ জন শিক্ষার্থী আছে। তারাও বাধ্য হয়ে এ ভাঙা কালভার্টের উপর দিয়ে চলাচল করছে। এ পথ ছাড়া প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। এ ব্রিজের নতুন করে দ্রুত তৈরি করার দাবি আমাদের।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী চৌধুরী মোহাম্মদ আছিফ রেজা বলেন, এ কালভার্টটি বছরের বেশি ভেঙে পড়ে আছে। আমি যশোর সদর উপজেলায় দায়িত্ব আসার আগেই ২০২৪ সালে সমস্ত কাগজপত্র প্রস্তুত করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ বছর কাজ শুরু হবে এমনটা মনে হচ্ছে না।
যশোর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। আশা করি অর্থ বরাদ্দ আসলে দ্রুত কাজটি শুরু হবে।