বাংলার ভোর প্রতিবেদক
প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগে যশোর শহরের দেশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। মঙ্গলবার সকালে অভিযান পরিচালনা করেন সিভিল সার্জন মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম। অভিযানে দেশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অপারেশন থিয়েটারের ত্রুটি থাকায় তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
একই সাথে ভুয়া চিকিৎসকের মাধ্যমে অপারেশন পরিচালনা করে প্রসূতি মৃত্যুর এই ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটিকে আগামি ৭ কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ২৫০ শয্য বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনেই দীর্ঘদিন ধরে দালাল মারফতে সিজারিয়ানের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসছে ১০ বেডের এই ক্লিনিকটি।
স্বাস্থ্য বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এই ব্যবসা ধরে রেখেছেন ক্লিনিকের মালিক পক্ষ। নানা অনিয়ম, ভুল চিকিৎসার অভিযোগ থাকলেও জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দৃশ্যমান কোনো নেয়া হয়নি এতদিন।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) শহরের ধর্মতলার কদমতলা এলাকার শ্রাবণ ইসলামের স্ত্রী অনন্যা রহমান বৃষ্টিকে ১০ হাজার টাকায় সিজারের জন্য দালালের মাধ্যমে চুক্তি করে দেশ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। চুক্তি মারফত সিজার সম্পন্ন করা হলেও রোগীর শরীরে নানা জটিলতা দেখা যায়। সিজার করেন শান্তা ইসলাম নামে এক অদক্ষ চিকিৎসক। সিজারের দুই দিন পর বৃহস্পতিবার প্রসূতির অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়। পরবর্তীতে রোগী শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে মারা যান।
নিহত রোগীর স্বামী শ্রাবণ ইসলাম ও পিতা হামিদুল ইসলাম বলেন, ভুল চিকিৎসার কারণে তাদের রোগী মারা গেছেন। ছোট নবজাতক বাচ্চাটি মাতৃহারা। রোগী মারা যাওয়ার পর নানাভাবে তাদের হাত করার চেষ্টা করেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে কোনোভাবে তারা ম্যানেজ না হলে হুমকি ধামকি দেয়া হয়। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের অন্যতম নেতা রাশেদ খান বলেন, তারা জানতে পারেন প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক মালিক পক্ষ নিহতের পরিবারকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। পরবর্তীতে তারা বিষয়টি জেলার সিভিল সার্জনকে জানান। সিভিল সার্জন ক্লিনিকটির ওটি সিলগালা করেছেন এবং তাদের ক্ষতি পূরণসহ নায্য বিচারের অশ^াস দিয়েছেন।
সিভিল সার্জন মাহমুদ হাসান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান করা হয়েছে।
তাদের অপারেশন থিয়েটার বন্ধ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের নায্য বিচার ও কিøনিকটির অনিয়মের বিরুদ্ধে সকল ধরণের আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।