নড়াইল সংবাদদাতা
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। এতে বাড়িঘরসহ গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, নোয়াগ্রাম, আড়পাড়া, বাহিরপাড়া, শরশুনা, গন্ডব এলাকার অন্তত ২০০ বাড়িঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। এলাকার বিভিন্ন অংশে প্রায় ২০০ গাছ ঝড়ে ভেঙে আর উপড়ে গেছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। গ্রামের রাস্তায় পড়ে আছে বড় বড় গাছ। ধানের ক্ষেতের পাকা ধান দুমড়ে মুচড়ে রয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়।
শরশুনা গ্রামের সাহেব আলীর বসত ঘরের ওপর ভেঙে পড়ে বিশাল আকারের একটি আকাশমনি গাছ। পরে ভয়ে তারা ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। ঝড়ে রান্নাঘরসহ বাকি দুটো ঘরের চাল উড়ে গেছে। খোলা আকাশের নিচে পরিবারসহ বসবাস করছেন তারা। প্রবীণ সাহেব আলী জানান, ২০/২৫ বছর এমন ঝর দেখিনি। চারিদিকে কেবল ধুলোর মতো হয়ে গেল। কোনো রকমে জান নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি।
বাহিরপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর মোল্যার গোয়ালঘর উড়ে গেছে। বসত ঘরের চাল একটি উড়ে পড়েছে রাস্তায়। শিলাবৃষ্টিতে জমিতে থাকা পাকা ধান ও নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, জমির ধান সব নষ্ট হয়ে গেছে। এখন চলবো কি করে।
মানিকগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজের মোটরপার্টসের দোকান। তার দোকানের সবগুলো চালই ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। মালপত্র গুলো ভিজে একাকার। কোনোটি আবার নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি জানান, দোকানে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল ক্ষতি হতে পারে। এই ক্ষতি পুশিয়ে উঠতে কয়েক বছর সময় লাগবে।
কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলের কালবৈশাখী ঝড়ে ইউনিয়নের অর্থ শতাধিক বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর খোঁজ খবর নিয়েছি।
এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইসরাফিল হোসেন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। এখনও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। আমাদের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জহরুল ইসলাম বলেন, এলাকার ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা চলছে। ক্ষতি পোষাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।