বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেছেন, নদী হত্যা করে পাড়ের সৌন্দর্য বর্ধন অযৌক্তিক। বরং নদীর গতিপথ স্বাভাবিক রাখতে পারলেই সেটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে রূপান্তর হতো। রোববার (২২ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে মাসিক নদী রক্ষা কমিটির সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন,  যদি নদী বেঁচে না থাকে তাহলে নদীর পাড়ে সুন্দর পার্ক দিয়ে কী হবে।  সবার আগে নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। এ সময় নদীতে দূষণকারী সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
নদী রক্ষা কমিটির সভায় পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক ইমদাদুল হক জানিয়েছেন, জেলার ১১টি নদীর ‘হেলথ কার্ড’ তৈরি করা হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, শহরের ভৈরব নদের পানি দূষণে ২৭টি বেসরকারি ও ২টি সরকারি প্রতিষ্ঠান জড়িত। এর মধ্যে ৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। বাকিদের আগামী এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে।  এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ না নিলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইমদাদুল হক  বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দুটি সরকারি প্রতিষ্ঠান সরাসরি নদীতে বর্জ্য ফেলছে, যা নদী দূষণের অন্যতম কারণ। ওই দুটি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, জেলার ১১টি নদীর জন্য প্রস্তুতকৃত হেলথ কার্ডে দেখা গেছে অধিকাংশ নদীর পানি দূষিত। তবে সব থেকে ভয়াবহ অবস্থা ভৈরব নদের, বিশেষ করে শহর অংশের পানিতে প্রায় সকল ধরণের বর্জ্য রয়েছে।
নদী রক্ষা কমিটির এক সদস্য উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ভৈরব নদের দুইপাশে প্রচুর কচু ও লাল শাকের আবাদ করা হচ্ছে। এসব সবজিতে নদীর দূষিত পানি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এই সবজিগুলো বাজারে বিক্রি হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। দূষিত পানিতে ব্যবহৃত এই সবজি খেলে ক্যানসারসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন সরকার, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ নদী রক্ষা কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Share.
Leave A Reply Cancel Reply
Exit mobile version