বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পরিচালিত ‘স্ট্রং প্রকল্প’-এর আওতায় সনাক (সচেতন নাগরিক কমিটি) যশোরের আয়োজনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। রোববার সকালে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মসূচী পালিত হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে সকলে, একসাথে, এখনই’ কে সামনে রেখে এই আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সনাক যশোরের সভাপতি অধ্যক্ষ পাভেল চৌধুরী। তিনি তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে সরকারের কার্যকর উদ্যোগের অভাবের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে একসাথে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। এ বিষয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে।
সনাকের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু, অধ্যক্ষ শাহিন ইকবাল, সদস্য প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান তাঁদের বক্তব্যে পরিবেশ সুরক্ষায় পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকার উপর জোর দেন। তাঁরা শিশুদের শৈশব থেকেই প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
উলসী সৃজনী সংঘের নির্বাহী পরিচালক আজিজুল হক মনি এবং পিপলস অরগানাইজেশন ফর ইমপাওয়ারমেন্ট (পোফ) এর নির্বাহী পরিচালক হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, উন্নয়নের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা অনিয়ন্ত্রিত প্লাস্টিকের ব্যবহার পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলছে বলে মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে ইয়েস (ইউথ এনগেজমেন্ট এন্ড সাপোর্ট) সদস্য ইসরাত জাহান ভৈরব নদীর করুণ পরিবেশগত অবস্থা নিয়ে তাঁর স্বরচিত লেখা পাঠ করেন। লেখায় নদী দূষণ ও প্লাস্টিক বর্জ্যের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পরে ইয়েস সদস্য নাজমুস সাবিক সিয়াম টিআইবি-সনাক প্রণীত ১৪ দফা সুপারিশমালা পাঠ করেন। সুপারিশমালায় প্লাস্টিক দূষণ রোধে কার্যকর নীতি, সচেতনতা, নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর জোর দেয়া হয়।
বক্তারা সম্মিলিতভাবে ‘প্লাস্টিক নয়, প্রতিশ্রুতি চাই বৈশ্বিক চুক্তিতে একসাথে যাই’ এবং ‘পরিবার থেকেই হোক প্লাস্টিক প্রতিরোধের প্রথম পাঠ’ স্লোগান দেন।
এই মানববন্ধন থেকে বক্তারা অবিলম্বে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে একটি কার্যকর বৈশ্বিক চুক্তি প্রণয়নের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগের পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমন্বয়ের মাধ্যমেই টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।