বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে বঙ্গবন্ধুর সহচর, প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, গণপরিষদ সদস্য প্রয়াত অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেনের বাসভবনে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিন তিনটি ককটেল বোমা বিস্ফোরণ করে দুর্বৃত্তরা। বোমার বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে এলাকা। তবে এতে কেউ হতাহত না হলেও এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে শহরের পাইপপট্টি এলাকার বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে। মোশাররফ হোসেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র মারুফ হোসেন খোকন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। হামলার সময়ে অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেনের ৯২ বছর বয়সী স্ত্রী বেগম নুরুননাহারসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের ধারণা, বৃহস্পতিবার থমথমে পরিস্থিতির মধ্যে কয়েকজন জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা জানান মারুফ হোসেন। সেই কারণে রাজনীতিক দুবৃর্ত্তরা এই হামলা করতে পারেন।
মারুফ হোসেন খোকন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে হঠাৎ করেই তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুবৃর্ত্তরা। তখন পরিবারের সকলেই ঘুমিয়ে ছিলাম। দুই তিন মিনিটের মধ্যে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সৃষ্টি হয় আতংক। ঘরের ভিতরে অসুস্থ ৯২ বছর বয়সীও মা ও শিশুরা আতংকিত হয়ে পড়েন বেশি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়িতে যেভাবে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে, সেই ধারাবাহিকতায় আমার বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আবার ধারণা করছি, গতকাল ১৫ আগস্ট জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে আমরা শ্রদ্ধা জানিয়েছি। সেই কারণেই এই হামলা হতে পারে বলে জানান তিনি। এই ঘটনায় পুলিশকে জানানো হয়েছে।’
ঘটনাস্থলের একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখা যায়, দুটি মোটরসাইকেলে চারজনের একটি দল এই হামলায় অংশ নেয়। তাদের কারও কারও মাথায় হেলমেট পরা ছিল। কারোও মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিলো। পাইপপট্টির সড়ক ঘেঁসে একটি গলিতে ঢুকেই তারা অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেনের বাসভবনে নিচ তলাতে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। আর একটি দ্বিতীয় তলাতে জানালাতে ছুঁড়লে জানালা ভেঙ্গে যায়।
এদিকে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মানুষের মাঝে আতংক সৃষ্টি হয়েছে। অন্য শুক্রবার ছুটির দিনেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পাইপপট্টি এলাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হলেও আজ আতংকের কারণে কেউ দোকান খোলেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ভুক্তভোগীর ছেলের ফোনে খবর পাওয়ার পর ওই রাতেই টহলরত পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ আলামত উদ্ধার করেছে। এই বিষয়ে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ‘অনেকেই এখন আতংকে আছে। ফলে শহরে রাতে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।