স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ:
যশোরে সোমবার সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। লাগাতর বর্ষার সাথে ঝড়ো বাতাস বইছে। চলমান ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে এই জনপদের মানুষেরও ভোগান্তি বেড়েছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ।
এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের দড়াটানা, নিউমার্কেট, কোর্ট মোড়, চৌরাস্তাসহ জনগুরুত্বপূৃর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। বৃষ্টি ভেজা রাস্তা ধরে ছাতা মাথায় পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন মানুষ। আবার রিকসা, ইজিবাইকে বর্ষার পানি থেকে রেহাই পেতে পর্দা নামিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকেই। সকাল বেলা রাস্তার পাশের টং দোকানগুলো বন্ধ ছিলো। বিকেল বেলা কিছু কিছু চায়ের দোকান খোলা থাকলেও মানুষের জটলা দেখা গেছে হোটেল রেস্টুরেন্টে। গরম গরম খিঁচুড়িÑমাংস আর রুটি খেতে ব্যক্তিগত গাড়ি চড়ে এসেছেন অনেকেই। এদিকে বর্ষার দিনে তুলনামূলক যাত্রী কম পাওয়ায় আয় রোজগার কমেছে রিকসা, ইজিবাইক চালকদের। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে ভাড়া বেশি নিয়ে ক্ষতির অংশ পুষিয়ে নিচ্ছেন তারা। বাড়তি ভাড়া গুণতে নারাজ যাত্রীরা। অর্ধেক ভেজা অর্ধেক শুকনো শরীর নিয়ে একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাচ্ছেন অনেকেই। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকাতে ঘর বন্দি কিশোরের দল শহরের বাদশা ফয়সাল স্কুলের মাঠে ফুটবল নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছেন। আবার ফুটপাতে ছাতা মাথায় ফল বিক্রি করতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের।
কথা হয় শহরের ঘোপ জেল রোড় এলাকার চায়ের দোকানি আনোয়ারা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, সকাল থেকে দোকান বন্ধ ছিলো। দুপুরের পর এসে দোকান খুলেছি। বর্ষার ভিতরে চা কম বিক্রি হয়। বড় দোকান হলে বর্ষার ভিতরে মানুষ এসে বসতে পারত। বাড়ি বসে না থেকে দোকানটা খুলে বসেছি। কম বেশি যা বেঁচা কেনা হচ্ছে বাড়ি থাকলে তাও তো হত না।
রিকসা চালক আবু সাঈদ বলেন, বর্ষার ভিতরে যাত্রী কম। আমরা ভাড়ায় গাড়ি চালাই যাত্রী হোক না হোক আড়াইশ’ টাকা মালিককে দিতে হবে। পাঁচ দশ টাকা ভাড়া বেশি চাইলে যাত্রীরা রাগারাগি করে চলে যাচ্ছে।
শহরের হাসপাতাল মোড়ে নিউ ভৈরব হোটেলের সামনে কথা হয় ইস্তিয়াক আহমেদ নামে একজনের সাথে। তিনি বলেন, বর্ষার দিনে খিঁচুড়ি খুব ভালো লাগে। সকাল থেকে বর্ষা থামছে না। এমন আবহাওয়াতে খিচুড়িÑমাংস মিস করা যায় না। বর্ষায় ভেজার কোনো সুযোগ নেই। বন্ধুকে সাথে নিয়ে গাড়ি করে চলে এসেছি।