বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে দিয়ে যশোর জিলা স্কুলে অনুষ্ঠিত হলো জ্যোতিবিজ্ঞানী রাধা গোবিন্দ চন্দ্র স্মারক বিজ্ঞান উৎসব। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সহযোগিতায় এই বিজ্ঞান উৎসবের আয়োজন করে জেসিবি বিজ্ঞান ক্লাব। যেখানে যশোরের ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৫টি প্রজেক্ট স্থান পায়। জিলা স্কুলে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। উৎসবে থাকে দেয়াল পত্রিকা, অলিম্পিয়াড, আইকিউ টেষ্ট, বিজ্ঞান ভিত্তিক কুইজ ও বির্তক প্রতিযোগিতা। এই উৎসবে অংশ নেয় শহরের স্বনামধন্য তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। উৎসবে যোগ দিতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জটা নিতে চান এখান থেকেই।
বিজ্ঞান উৎসবে যশোর জিলা স্কুলের এক দলের প্রজেক্ট ছিলো সম্মিলিত উদ্ভাবন ‘ডিজিটাল সিটি’। তারা জানান, আমরা চাই গোছালো সিটি থাকবে সিসিটিভির আওতায়। আগুন লাগলে সংকেত দেবে ‘ফায়ার এলার্ম’। থাকছে স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও লাইব্রেরি। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকবে ডিসপ্লে বোর্ড। যেখানে খেলা, খবরসহ যেকোন তথ্য সহজে পৌঁছে দেওয়া যাবে সিটিবাসীর কাছে। যশোর কালেক্টরেট স্কুলের একদল শিক্ষার্থীরা প্রদর্শন করে রেললাইনে অসাবধানতায় কাটা পড়ে মৃত্যু ও ইচ্ছে মৃত্যুসহ অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনায় প্রাণহানিরোধের কৌশল। তারা লেজার ও সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহার করে দর্শনার্থীদের দেখিয়েছে কীভাবে রেললাইনে অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু রোধ করা যায়।
যশোর জিলা স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাবরিক রহমান জানান, আমাদের ক্লাসের কয়েক বন্ধু মিলে উদ্ভাবন করেছি ফায়ার ফাইটিং রোবট। যেসব জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁচ্ছাতে পারে না; সেসব জায়গায় এই রোবট দ্রুত এবং নিরাপদে অগ্নিকান্ড সংগঠিত জায়গায় পৌঁচ্ছে উদ্ধার করবে। যশোর ক্যান্টমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী লামিয়া সুলতানা জানান, এই ধরণের আয়োজনে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। পড়াশোনার পাশাপাশি বিজ্ঞান চর্চ্চা আমাদের সমৃদ্ধ করবে। এই ধরনের আয়োজন আরোও আয়োজন করার উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান।
এর আগে বেলা ১০টার দিকে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজ্ঞান উৎসবের উদ্বোধন করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস। পরে অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, আজকের তরুণ সমাজের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। আমাদের ছেলে মেয়েরা মেধা ও দক্ষতায় অন্য জাতির চেয়ে কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। সঠিক দিক নির্দেশনা ও পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারলে বিজ্ঞান চিন্তায় উজ্জীবিত এই প্রজন্ম দেশকে নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়। ভবিষ্যতে এই ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের মধ্য থেকেই উদ্ভাবক বেরিয়ে আসবে। তাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহার করবে বিশ্বের মানুষ।
ক্ষোভের সঙ্গে তিনি আরোও বলেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাধা গোবিন্দ চন্দ্র যশোরের মানুষ। যশোরের গর্ব। কিন্তু এই প্রজন্ম তাকে কেউ চিনে না। এমনকি তার বাড়িটাও দখল হয়ে রয়েছে। তার বাড়িটি দখলমুক্ত করে সেখানে বিজ্ঞান যাদুঘর করার দাবি জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে জেসিবি ক্লাবের সভাপতি সাজিন আহম্মেদ জয়ের সভাপতিত্বে অন্যান্যেদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আমিনুর রহমান, জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন, জেলা পূজা পরিষদের সভাপতি দিপঙ্কর দাস রতন প্রমুখ।