♦দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে শিগগিরই ক্রাশ প্রোগ্রাম
বাংলার ভোর প্রতিবেদক
আজ (শুক্রবার) সকালে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবসউপলক্ষে যশোরে র্যালি ও আলোচনা সভা হয়েছে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি, ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে জেলা প্রশাসন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ক্যাব যশোর এই আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক এসএম শাহীন বলেন, কোনভাবেই দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানা যাচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ মানবিক নৈতিকতার অবক্ষয়। যখনই আমরা কোন অভিযান চালায় তখন দাম কমে যায়। আবার অভিযান শেষ হলেই দাম বেড়ে যায়। তাই এবার আমরা একটি ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে যাচ্ছি।
এ সময় তিনি আরো বলেন, কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধি কিংবা ভোক্তাদের সাথে কোন রকম প্রতারণা করলে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। এছাড়াও ঈদকে সামনে রেখে চলবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিয়মিত অভিযান।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভোক্তারা যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং কোন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কেউ যদি অভিযোগ দেয়। ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলোচনা সভায় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন হলে কেউ আর প্রতারণা করার সাহস পেতো না। ভোক্তা অধিকার এখনো পর্যন্ত কোন দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারেনি। বিভিন্ন সময় আলোচনা এবং অভিযান চালানো হলেও অপরাধীদের কঠোর কোন শাস্তির আওতায় না আনতে পারলে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব না।
জেলা বেকারি মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, কাচামালের দাম বেড়ে যাওয়ার পরও আমারা ঘোষণা করেছিলাম বেকারি পণ্যের দাম বাড়াবো না। আমরা আমাদের কথা রেখেছি অথচ খোলা বাজারে সেই পণ্য বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে করে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। তাই সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সাথে ভোক্তা অধিকারের আলোচনা করা উচিৎ ।
নাসিব যশোরের সভাপতি শাকির আলী বলেন, আইনের সঠিক ব্যবহার না থাকায় বাজারে নিয়ন্ত্রণ আসবে না। তাছাড়া সঠিক তদারকির ঘাটতি রয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া অবস্থার উন্নতি সম্ভব না।
তবে সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক সৈয়াদা তামান্না তাসনিম বলেন, প্রতিমাসেই অন্তত ১৬ থেকে ২০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। সর্বশেষ গতমাসে ১৬টি অভিযানে ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে লোকবল সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ সময় তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান, ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য সম্পর্কে কেউ অবগত হলে তা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকার্তার কাছে যেকোন মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করার জন্য। দায়েরকৃত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত ও জরিমানা আরোপ করা হলে আদায়কৃত জরিমানার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারীকে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুর রহমান, ক্যাব যশোরের সভাপতি জহুর আহমেদ, ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সভাপতি পান্নু চাকলাদার প্রমুখ।