বাংলার ভোর প্রতিবেদক
দীর্ঘদিন ধরে অস্বস্তিতে ভুগতে থাকা সবজির বাজারে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে। শীতের মৌসুম শুরু হয়ে গেলেও বাজারে কমছিল না সবজির দাম। এতে বেশখানিকটা চাপের মধ্যেই ছিলেন ভোক্তারা। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য তা ছিল ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’। তবে এই সপ্তাহে এসে অনেকটাই কমেছে সবজির দাম। একইসঙ্গে কমেছে সব ধরনের আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দামও। অন্যদিকে দাম বাড়ানোর প্রায় তিন সপ্তাহ হয়ে গেলেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি সয়াবিন তেলের বাজার। তেলের কোম্পানিগুলোকে অর্ডার দিয়েও তেল মিলছে না। বিক্রেতারা বলছেন, তাদের ঘোরানো হচ্ছে।
শুক্রবার শহরের বড় বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্যান্ড বাজার ও রেলবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন শাক সবজিতে ভরপুর বাজার। থরে থরে সবজির ডালি সাজিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে পণ্যের দাম হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতারা। সাধারণ ক্রেতারাও বাজার ঘুরে ঘুরে সুলভমূল্যে পছন্দের সবজি ক্রয় করছেন।
প্রতিকেজি বেগুন ৫০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, শিম ৩০ টাকা, ফুলকপি ১০ থেকে ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ঝাল ৬০ থেকে ১০০ টাকা, পালন শাক ১০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, উস্তে ৫০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মেটে আলু ৬০ টাকা, মেচুড়ি ৫০ টাকা, লাউ (পিচ)২০ টাকা, কলা ৩০ টাকা, ওলকপি ৩০ টাকা, ব্রোকলি ৬০ টাকা, নতুন আলু ৪৫ টাকা, পুরানো আলু ৭০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৮০ টাকা, রসুন ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, আমড়া ৪০ টাকা, কচু ৪০ টাকা, শুকনো মরিচ ৫০০ টাকা, মূলা ১০ টাকা, ডিমের হালি ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি দোকানের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মধ্যে জাতভেদে প্রতি কেজি চাল ৫৪ টাকা থেকে ৯০ টাকা, আটা ৪৫ টাকা, ময়দা ৭৫ টাকা, চিনি ১৩০ টাকা, সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা, লবন ৪০ টাকা, মুসরী ডাল ১১০ টাকা, বুট ডাল ৮০ টাকা, ছোলার ডাল ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, যশোরের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭শ’ টাকা কেজি দরে। জাতভেদে মুরগির মাংস ২২০ টাকা থেকে ৫৮০ টাকা ও খাশির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১১শ’ টাকা।
শহরের বড় বাজারে শংকরপুর থেকে সবজি কিনতে আসা নাছিমা বেগম জানান, এখন বাজারের অনেক ধরণের তরি তরকারি পাওয়া যাচ্ছে। মান ভেদে সবজির দাম একেক দোকানে একেক রকম। তবে, যে দাম তাতে চিন্তার কিছু নেই। ১০ টাকা দিয়েও সবজি কেনা যাচ্ছে। বাজারে জিনিসের দাম সারা বছর এমন থাকলে সবাই তৃপ্তি সহকারে খেতে পারবে।
বড় বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহিন ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে সবজির দাম কমছে। অনেক ব্যবসায়ী দূর থেকে সবজি কিনতে চাচ্ছেন না বাড়তি মজুরি ও পরিবহন খরচের জন্য। দাম কমলেও কেনা বেচা বেড়েছে। শীতকালিন সবজির চাহিদা আছে। কেনা দামের উপর ২ থেকে ৫ টা লাভে সব সবজি খুচরা বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা।
ইদ্রিস মোল্যা নামে অন্য এক বিক্রেতা বলেন, সবজির দাম কমার কারণ বাড়তি উৎপাদন। অনেক কৃষক খেত থেকে সবজি তুলে বিক্রি করছেন না খরচ উঠবে না বলে। এত কম দামের কারণে কৃষকের লস গুনতে হবে। ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা দূর দূরন্ত থেকে সবজি কিনতে চাচ্ছেন না। অনেকে দোকান বন্ধ রেখে বা অল্প মালামালা কিনে বিক্রি করে অন্য কাজ করছেন।
নাইম ইসলাম নামে এক ক্রেতা জানান, বাজারে শাক সবজির দাম কমলেও মাংসের দাম কমছে না। মাংস কিনে খাওয়ার মত নেই। তাছাড়া অন্য সব সবজির দাম নাগালের মধ্যে আছে।