বাংলার ভোর প্রতিবেদক
পবিত্র ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষের ছুটিতে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতে রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী পারাপার হয়েছে। ঈদের দিন থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত পাঁচ দিনে দুই দেশের ৩২ হাজারের বেশি মানুষ যাতায়াত করেছেন, যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত ছয় গুণ বেশি। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছেন বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের কর্মীরা। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে দুই দেশের ইমিগ্রেশনে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে পেট্রাপোলে ভোগান্তি বেশি হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ১১ এপ্রিল ঈদের দিনের পর সোমবার বেলা দুইটা পর্যন্ত পাঁচ দিনে মোট ৩২ হাজার ২৮৩ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ১৯ হাজার বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেন। আর ১৩ হাজার ২৮৩ জন ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি ছুটি শেষ হওয়ায় আজ থেকে ভারত হতে দেশে ফেরা যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ঈদের দিন থেকে আজ দুপুর পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি যাত্রী দুই দেশের মধ্যে গমনাগমন করেছেন। স্বাভাবিক সময়ে এ সংখ্যা পাঁচ থেকে ছয় হাজারের মধ্যে থাকে। এবার রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করেছেন। ঈদ ও নববর্ষ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটি থাকায় মানুষ ঘুরতে ও চিকিৎসার জন্য ভারতে যান বলে তিনি জানান।
যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা রশিদ আহমেদ এবার পরিবার নিয়ে ভারতে ঈদ ও নববর্ষ উদ্যাপন করেছেন। ঈদের আগের দিন তিনি বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন।
রশিদ আহমেদ বলেন, স্ত্রী ও ছেলের চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি বেড়ানোর উদ্দেশে ঈদের আগের দিন ভারতে যান। বেশি সময় কাটিয়েছেন শিলিগুড়িতে। পয়লা বৈশাখের দিন কলকাতা শহরে ছিলেন। বাংলাদেশি মানুষের চাপে পুরোনো কলকাতায় পা রাখার জায়গা নেই এমন অবস্থা। এ সুযোগে হোটেল ব্যবসায়ীরা ভাড়াও বাড়িয়ে দিয়েছেন। পরিবার নিয়ে ঘুরে ঘুরে হোটেল খুঁজতে হয়েছে। কয়েকজন যাত্রী জানান, ইমিগ্রেশন পার হতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বেনাপোলে কাগজপত্র যাচাই-বাছাইপ্রক্রিয়া সহজতর হলেও ভারতের পেট্রাপোলে দীর্ঘ সময় লাগছে। পেট্রাপোলে ১৮টি কাউন্টার (ডেস্ক) থাকলেও সবগুলোতে কর্মকর্তা না থাকায় যাত্রীদের সারি দীর্ঘ হয়। পেট্রাপোলে যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
জানতে চাইলে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি কামরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, ঈদের সময়ে যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় নিয়ে বাড়তি প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য সব ডেস্কে যাতে কর্মী থাকেন, সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পেট্রাপোলে ভোগান্তির বিষয়ে বলেন, পেট্রাপোলের ওসির সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে তাদের তাগিদ দেয়া হয়। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, ইমিগ্রেশনে দেরি হচ্ছে না। দেরি হওয়ার মূল কারণ বিএসএফের তল্লাশি। এরপরও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাগিদ দেন।