বাংলার ভোর প্রতিবেদক
ইমিটেশেনের চেইনে ঝুলছে আইসক্রিমের কাঠি দিয়ে তৈরি দোলনা। প্লাস্টিকের ক্ষুদে আকৃতির একটি পুতুল দোল খাচ্ছে সেই দোলনায়। দোলনার নিচের পাটাতন ও স্ট্যান্ডগুলোও আইসক্রিমের কাঠির। দোলনা, পাটাতন ও স্ট্যান্ডে সবুজ, নীল ও টুকুটুকে লাল রঙের প্রলেপ। ব্রাদার টিটোস হোমের বার্ষিক হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও বিক্রয় অনুষ্ঠানে প্রথম পুরস্কার বিজয়ী সাদিক সাদাতের স্টলে এই শো-পিসটি বিচারকসহ নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের।
স্কুলটির প্রথম শ্রেণির এই শিক্ষার্থীর কোমল হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি গ্রামীণ কুড়ে ঘর, সি-বিচ চেয়ার ও শিশুপার্কও দেখতে ছিল আকর্ষণীয়। সাদিক সাদাত এগুলোও আইসক্রিমের কাঠি ও কাগজ দিয়ে তৈরি করেছে। তার ওপর প্রলেপ দিয়েছে বিভিন্ন রঙের।
শনিবার বিকেলে যশোর শহরের লালদিঘি পাড়ে ব্রাদার টিটোস হোম স্কুল আঙিনায় শিশুদের তৈরি বিভিন্ন হস্তশিল্পের ৪২টি স্টল ছিল। স্টল ঘুরে দেখা যায়, ফেলনা জিনিস দিয়ে তৈরি নান্দনিক সব হস্তশিল্প। স্টলগুলো মা এবং শিশুরা সুন্দর করে সাজিয়েছে। প্রদর্শনীতে নানা রকম সুন্দর সুন্দর হস্তশিল্প ছিল।
দেখা গেছে, একটি স্টলে শোভা পায় বাঁশ কাগজের ডিম রাখার ‘কেস’ (খাপ) দিয়ে তৈরি কচ্ছপ। বিভিন্ন রঙের মিশেলে কচ্ছপের আকৃতি পেয়েছে। এ ছাড়ার স্টলগুলো ছিলÑ পাটের দড়ি ও মোটা কাগজ দিয়ে তৈরি পেনহোল্ডার। শিশুদের কেউ কেউ আবার আর্ট পেপার দিয়ে তৈরি করেছে উইন্ডমিল, ফুলদানি ও টারবাইন। এ ছাড়াও সাদা রঙের টিশার্টে রঙ তুলির আঁচড়ে রকমারি সব ডিজাইন করেছে অনেকে। এসব টির্শার্ট অনুষ্ঠানের শেষভাগে নিলামে বিক্রি করা হয়। নিলামে একটি টিশার্ট সর্বোচ্চ দাম আট হাজার টাকায় বিক্রি হয়। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা একে অন্যকে ছাপিয়ে দাম হেকে এসব টির্শাট কিনে নেন। নিলামে মোট ১৬ হাজার ৭০০ টাকার টির্শার্ট বিক্রি হয়।
স্কুলটির অধ্যক্ষ আলী আজম টিটো জানান, নিলামে বিক্রির টিশার্টের ও হস্তশিল্প বিক্রির টাকায় শিশুরা শীতবস্ত্র কিনে বিতরণ করবে। প্রতিবছর শিশুরা এভাবে নিজেদের তৈরি হস্তশিল্প বিক্রির টাকায় শীতবন্ত্র বিতরণ করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সহকারী জেলা তথ্য কর্মকর্তা এলিন সাঈদ-উর রহমান বলেন, হস্তশিল্প প্রদর্শনী থেকে শিশুদের এসব শিল্পকর্ম বিক্রির টাকায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ মহৎ একটি উদ্যোগ। শিশুদের তৈরি হান্ডিক্রাফটগুলো দেখে সত্যিই আমি বিমোহিত।