বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ থেকে সোমবার সকাল থেকে কয়লা অপসারণ শুরু করা হয়েছে। যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভৈরব নদে ডুবে যাওয়া কয়লাবোঝাই কার্গো জাহাজ থেকে কয়লা অপসারণ শুরু করা হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে খননযন্ত্র দিয়ে ডুবে থাকা কার্গো জাহাজ থেকে কয়লা তুলে বাল্কহেডে বোঝাই দেয়া হয়। পরে ওই কয়লা নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদের অন্য ঘাটে নেওয়া হয়।
কার্গোর মাস্টার বলেন, ভাটার সময় জাহাজ থেকে কয়লা নামানো হচ্ছে। জোয়ার এলে কয়লা নামানো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এর আগে গত শনিবার রাতে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া এলাকায় কয়লাবোঝাই এমভি সাকিব বিভা-২ কার্গো জাহাজের তলা ফেটে তা ভৈরব নদে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার সময় জাহাজে প্রায় ৬৮৫ মেট্রিক টন কয়লা ছিল। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেএইচএম গ্রুপ ইন্দোনেশিয়া থেকে ওই কয়লা আমদানি করে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় এনেছিল।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা কয়লা বড় জাহাজে করে মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ায় আনা হয়। সেখান থেকে প্রায় ৬৮৫ মেট্রিক টন কয়লা ছোট কার্গো জাহাজ এমভি সাকিব বিভা-২ কয়লাবোঝাই করে গত শুক্রবার সকালে নওয়াপাড়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। শনিবার সন্ধ্যায় জাহাজটি অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া নোনাঘাট এলাকায় ভৈরব নদের ঘাটে পৌঁছায়। জাহাজটি নোঙরের জন্য অপেক্ষায় ছিল। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নদে ভাটা ছিল। এ সময় কার্গো জাহাজটি ঘোরানোর সময় নদের মাটির সঙ্গে জাহাজের তলদেশের সজোরে আঘাত লাগে। এতে তলদেশ ফেটে জাহাজে পানি উঠতে থাকে এবং জাহাজটি ধীরে ধীরে নদের পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। প্রায় এক ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে জাহাজটি নদের পানিতে ডুবে যায়।
এমভি সাকিব বিভা-২ এর মাস্টার মো. বেল্লাল জানান, শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নওয়াপাড়া নোনাঘাটের পাশে জাহাজটি ভেড়ানো হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে নদে ভাটা ছিল। এ সময় কার্গো জাহাজটি ঘাটে নোঙর করার জন্য ঘোরানো হচ্ছিল। হঠাৎ নদের শক্ত মাটির সঙ্গে জাহাজের তলদেশের সজোরে আঘাত লাগে। এ সময় জাহাজের তলদেশ ফেটে যায়। এরপর জাহাজে পানি উঠতে থাকে এবং জাহাজটি ধীরে ধীরে নদের পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে জাহাজটি নদের পানিতে ডুবে যায়। জাহাজের নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে জাহাজের ওপরের তলা পানির ওপরে রয়েছে।
তিনি জানান, নদে জোয়ারের সময় জাহাজের নিচতলা সম্পূর্ণ পানিতে তলিয়ে থাকলেও ভাটার সময় পানি কমে গেলে জাহাজের নিচতলা অনেকটা পানির ওপরে ভেসে উঠছে। এ জন্য ভাটার সময় জাহাজ থেকে কয়লা নামানো হচ্ছে। জোয়ার এলে কয়লা নামানো বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সম্পূর্ণ কয়লা নামানোর পর জাহাজটি পানির ওপরে উঠে আসবে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেএইচএম গ্রুপের লজিস্টিক ব্যবস্থাপক রাহুল দেব বিশ্বাস বলেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে নদে ভাটা শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নদে ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে কয়লা উদ্ধারের কাজ শুরু করা হয়েছে। যে সময় পর্যন্ত নদে ভাটা আছে, সে সময়ের মধ্যে জাহাজের সম্পূর্ণ কয়লা উদ্ধার সম্ভব হবে। কয়লা পানিতে ভিজে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা কেবল কয়লা উদ্ধার শেষ হলে বোঝা যাবে।