বাংলার ভোর প্রতিবেদক
চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদের সাথে ভৈরব নদের সংযোগ ও নদ সংস্কারে নামে অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে যশোরের ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের নেতারা। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে এ স্মারকলিপি দেন নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভৈরব নদী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নদী। ব্রিটিশ আমলে নদীর উপর দর্শনা চিনিকল নির্মাণ করায় ভৈরব নদের সাথে মাথাভাঙ্গা ও পদ্মার নদীর পানি প্রবাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। যার ফলে ভৈরবসহ এই অঞ্চলের নদী পানি ব্যবস্থাপনা প্রাণ-প্রকৃতি জীব-বৈচিত্র ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। জলাবদ্ধতা, লবণাক্ততা, ভূ-গর্ভস্থ পানি সংকটের প্রভাবে জনজীবন নানা ধরনের সংকটে পড়েছে। ষাটের দশক থেকে নদী সংস্কারে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। বরং পরিস্থিতি আরো জটিল ও ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়মের কারণে অর্থ অপচয় হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভৈরব নদ সংস্কারে ২৭২ কোটি ৮১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকার গৃহিত প্রকল্প গত জুন মাসে পানি উন্নয়ন বোর্ড সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। সংস্কার কাজে নদীতট আইন মানা হয়নি, যথাযথভাবে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা হয়নি, নদী খননের মাটি নদীগর্ভে ফেলা হয়েছে। নদী খননের সময় নদীর মাঝ বরাবর উঁচু রেখে দুই পাশ গভীর করে পানি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এমনকি নদী কাটার সময় দেওয়া আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ করে হয়নি। সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, ৫২টি ব্রীজ নৌ-চলাচলের উপযোগী করে পূনঃনির্মাণ করা হবে। কিন্তু তাতেও অনিয়ম করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতি ভৈরব নদ বাঁচাতে মাথাভাঙ্গা নদীর সাথে ভৈরবের সংযোগ ঘটাতে পারলে যুগান্তকারী সুদূরপ্রসারি প্রভাব ফেলবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদীসমূহ প্রবাহ ফিরে পাবে, ভবদহসহ উপকূলীয় জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। এজন্য নদী সংস্কারে অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ ও মাথাভাঙ্গা নদীর সাথে ভৈরব নদের সংযোগ স্থাপনে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে স্মারকলিপিতে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাসান মজুমদার স্মারকলিপি গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আফসার আলী, উপদেষ্টা ইকবাল কবীর জাহিদ, সদস্য জিল্লুর রহমান ভিটু, কপোতাক্ষ বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক অনিল বিশ্বাস প্রমুখ।