বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরের মনিরামপুরে আবদুল মালেক নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকারির অভিযোগ উঠেছে। জাল সনদে চাকরির অভিজ্ঞতা দিয়ে এবার সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের পায়তারা করছেন। নিয়োগ বোর্ড বসলেও শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে। তার জালিয়াতি তদন্তে নেমেছে শিক্ষা অফিস। অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল মালেক ১৪ বছর ধরে মণিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া গাংগুলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) হিসেবে চাকরিরত ছিলেন। তিনি সরকারি কোষাগার থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছেন। সম্প্রতি পদত্যাগ করে অন্য প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের পায়তারা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে গেছে।
এ বিষয়ে মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগ বোর্ড বসেছিল। কিন্তু সনদ জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় আব্দুল মালেকের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিসার এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি তদন্ত কাজ শুরু করেছি।’
জানা যায়, ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর আব্দুল মালেক উপজেলার খেদাপাড়া গাংগুলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (কৃষি) হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল মালেক। চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই তার শিক্ষক নিবন্ধন সনদ নিয়ে একটি পক্ষ অভিযোগ তোলেন। তার সনদ যাচাইয়ের দাবি তোলেন। ২০০৯ সালে পাস দেখানো শিক্ষক নিবন্ধন সনদে রোল নম্বর ৩১৯১২৫৭১। যোগদানের পর থেকে দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এ নিয়ে খেদাপাড়া গ্রামের মৃত মকছেদ আলী সরদারের ছেলে জুলফিক্কার আলী আদালতে একটি মামলা করেন। মামলার পর মনিরামপুর থানাকে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তৎকালীন থানার এএসআই সৈয়দ আজাদ আলী ২০২০ সালে ৫ জুলাই আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
দাখিলকৃত প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়, সহকারী শিক্ষক আব্দুল মালেক এনটিআরসির যে সনদটি নিজের দাবি করছেন সেটি তার নয়। ৩১৯১২৫৭১ এ রোল নম্বরের সনদের প্রকৃত মালিক বগুড়ার সাইদুর রহমানের ছেলে আইয়ুব আলী। আব্দুল মালেক ওই রোল নম্বর ব্যবহার করে ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন সনদ তৈরি করে চাকরি করে আসছেন। কিন্তু এই তদন্ত প্রতিবেদন পরও মামলা চলমান থাকায় চাকরি চালিয়ে যান আব্দুল মালেক।
তিনি গত ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত খেদাপাড়া গাগুলিয়া ফাজিল মাদ্রাসা হতে সরকারি বেতন বোনাস উত্তোলন করেছেন। তবে বিতর্কের মুখে চলতি মাসের ১ তারিখ তিনি ওই মাদরাসা থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে বোয়ালিয়াঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পায়তারা চলছে। মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে পদ বাগিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে একটি পক্ষ অভিযোগ তুলেছেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত হয়ে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করেন আবদুল মালেক। তিনি দাবি করেন এটি রং নাম্বার। তিনি আবদুল মালেক নন। পরে ওই নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।