বাংলার ভোর ডেস্ক
‘বিরাজনীতিকরণে মনগড়া তত্ত্বে জনপ্রিয় বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার বিকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা ‘মাইনাস টু’র কথা বলেন তাদের আশা কখনো পূরণ হবে না। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর আমীর খসরু সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণ বা মাইনাস টু- কেউ যদি এরকম মনগড়া কথা বলে এটা তাদের সমস্যা। বাংলাদেশ আজকে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আজকে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে-সবচেয়ে জনপ্রিয় দল বিএনপি, সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান বাংলাদেশে।
আমীর খসরু বলেন, “বাংলাদেশ তাদের অপেক্ষায় আছে, তাদের অপেক্ষায় থাকবে। এখানে মাইনাস টু’র কথা যারা বলে তারা আশা করে আর কি। ওই আশা জীবনে পুরণ হবে না। ওটা এরশাদ (এইচএম এরশাদ) পারে নাই, ওইটা ওয়ান-ইলেভেন পারে নাই। আর এখন তো, আজকে বিএনপি অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী দল, একে নিশ্চিহ্ন করা যাবে না।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ অনেক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন রাজনৈতিক দল সংস্কারের আলোচনাও ওঠে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মাইনাস টু’ তথা দুই নেত্রীকে বাদ দিয়ে তাদের দলে সংস্কার আনার বিষয়টি সামনে আসে।
২০২৪ সালের জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরেও রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক দল সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা উঠেছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি তুলেছেন।
আমীর খসরু বলেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তার জন্য প্রথম কাজ হচ্ছে, নির্বাচন, নির্বাচন হচ্ছে প্রথম সংস্কার। এটা দিয়ে শুরু করতে হবে সংস্কার ও গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আগামী দিনে যে পরিবর্তনের প্রত্যাশা তা পুরণ হবে।
গত দেড় দশকে শেখ হাসিনার সরকারের প্রতিবন্ধকতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী দেশে ফিরতে পারেননি। তাদের মধ্যে কয়েকজন দেশে ফিরেছেন।
দেশে ফেরা নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাঈদ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর, রানা চৌধুরী, শাহিন আব্দুল্লাহ, কাউসার আলমসহ কয়েকজনকে নিয়ে শুক্রবার বিকালে আমীর খসরু শেরে বাংলা নগরের জিয়ার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
সেখানে সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, গত ১৬ বছর এই লোকগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট বিরোধী, মানবতাবিরোধী, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। তারা হোয়াট হাউজের সামনে, ক্যাপিটাল হিলের সামনে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সামনে বাংলাদেশের স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, এদের বিরুদ্ধে, তাদের আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে ওরা মামলা দিয়েছে, নির্যাতন করেছে। এদের পরিবারের অনেক লোক জীবনও দিয়েছে, সন্তান-সন্তুতী হারিয়েছে। এই লোকগুলোকে আমাদের তরফ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
জুলাই-অগাস্ট আন্দোলন একদিনে হয়নি তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই আন্দোলন গত ১৬ বছরের কত হাজার লক্ষ মানুষের ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেটা অনেকে ভুলে যাই। এই লোকগুলো ১৬ বছর দেশে ফিরে আসতে পারেনি। এদেরকে বাদ দিয়ে কোনো আান্দোলন হয় নাই।
এ সময় সেখানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।