বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়ার ভাড়াটিয়া মৌ হিজড়ার রহস্যজনক মৃত্যুর পর তার মরদেহ থেকে ছয় ভরি স্বর্ণালংকার ও ১০ লাখ টাকার মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। রোববার বিকেলে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি (গুরুমা) ভাবনা হিজড়া। তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পপি হিজড়া। নিহত মৌ হিজড়ার বাড়ি নড়াইল জেলার বাঐসোনা এলাকায়। তিনি দীর্ঘদিন যশোর শহরের রেলগেট পশ্চিমপাড়ার মৃত গোলামের স্ত্রী ফতে বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মৌ হিজড়ার মৃত্যুর পর তার দেহ থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ এক লাখ টাকা, ২৩ হাজার টাকার বিকাশ, কম্বল, চাদর, মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায় রেলগেট পশ্চিমপাড়ার কয়েকজন। এর মধ্যে রোজিনা, ফতে বেগম, টগর, সাগর, শ্যাম ওরফে সালমাসহ বেশ কয়েকজন। মৌ হিজড়ার দেহ থেকে গহনা খুলে নেয়ার মত ঘৃণ্য কাজ করেছে রোজিনা এবং তার সহযোগীরা। তার মালামাল ফেরত না দিলে আমরা আন্দোলনে নামবো। এছাড়া, ফতে ও টগর গং মৌ হিজড়ার কাছে বিভিন্ন লোকজনের পাওনা টাকা ও মালামালও আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এমনকি তার মৃত্যুর পর কুলখানির জন্য চাঁদা তুলে গরুর মাংস কিনে খেয়েছে অভিযুক্তরা। এ বিষয়ে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা যশোর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের কাছে অভিযোগ করেছেন। তারা মৌ হিজড়ার মালামাল ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের শোষণ ও অবিচারের শিকার। মৌ হিজড়ার মৃত্যু ও মালামাল আত্মসাতের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং তারা এই ঘটনার বিচার দাবি করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা দ্রুত তদন্ত ও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মৌ হিজড়ার ভাইপো মো. আনিছ, মাহমুদুল হাসান, হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্য লতা, চুমকি, পূজা, শিমলা, পলক, আশা প্রমুখ।