বাংলার ভোর প্রতিবেদক
সরকারিভাবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ভোগ্যপণ্যের বাজারে সেটির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক পণ্যবাজার নিম্নমুখি থাকলেও এরই মধ্যে বেড়ে গেছে ভোজ্যতেল, মসলা, ডাল, খাদ্যের কাঁচামাল ও ড্রাই ফ্রুটসের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক লাফে ডলারের দাম সরকারিভাবে প্রায় সাড়ে ৭ টাকা বৃদ্ধির ফলে পণ্যের আমদানি ও পরিবহন খরচ বেড়েছে। তাই পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
মূলত মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে ব্যাপকহারে। কোরবানি ঈদ সামনে রেখে মসলাজাতীয় বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ২০০ টাকা থেকে ৮শ’ টাকা পর্যন্ত। বিশেষত শতভাগ আমদানিকৃত ভোগ্যপণ্যের বাজারেই ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে।
রোজার পর পণ্যের চাহিদা কমে স্বাভাবিকভাবে দাম স্থিতিশীলতায় ফেরার সম্ভাবনা থাকলেও ডলারের দাম বাড়ানোর ঘটনা কোরবানি ঈদ সামনে রেখে বাজারকে উসকে দিয়েছে। ঈদুল আজহার আগে দাম আরো বাড়তে পারে, এমন আশায় সরবরাহ চেইনে সংকট তৈরি করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলে স্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরা।
যশোরের বড় বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সব ধরনের মসলার দাম বেড়েছে অনেক। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২শ’ থেকে ৮শ’ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মসলার। আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজিতে, আগে ছিল ২৪০ টাকা। রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়, আগে ছিল ১৮০ টাকা। এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৩২শ টাকা কেজিতে। আগে ছিল ২৪শ টাকা। দাড়চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকায়, আগে ছিল ৪২০ টাকা। লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। গত ১৫ দিন আগেও ছিল ১৪০ টাকা।
বড় বাজারের মুদি দোকানী আশিষ সাহা জানান, ‘রোজা ও ঈদের পর কোরবানি সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে পণ্য আমদানি ও মজুদ করেছে। ফলে বাজারে পর্যাপ্ত পণ্য রয়েছে। তবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা আমদানির পথে থাকা পণ্যের বাড়তি খরচকে মাথায় রেখে লেনদেন করতে চাইছেন। এতে দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে সব ধরণের মসলার দাম বেড়েছে। ২শ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮শ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বেড়েছে। এতে করে আমাদের ব্যবসায় প্রভাব পড়ছে। কেননা অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে ক্রেতারা অতিপ্রয়োজন ছাড়া পণ্য কিনছেনা। অনেকে চাহিদার চেয়ে কম পণ্য ক্রয় করছে। এতে করে আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়লেও আয় কম হচ্ছে।
শহরের বেজপাড়ার মুদি দোকানী মো. বাবু জানান, সব ধরণের মসলার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতারা কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। খুব বেশি প্রয়োজন না পড়লে তারা বেশি মসলা কিনছেনা। আমাদের বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে, আবার বিক্রি সেইভাবে হচ্ছেনা।