বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোরে একটি লেপ-তোষকের কারখানা ও শোরুমে অগ্নিকাণ্ডে মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে শহরতলী ধর্মতলা বাজারের মনজু বেডিং এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আধাঘন্টার টেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীর।
ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, শহরতলী ধর্মতলা এলাকায় তিনজনের অংশিদারিত্বে দীর্ঘদিন ধরে বেডিং সামগ্রীর ব্যবসা করে জনতা বেডিং। শুক্রবার সকাল থেকে প্রতিদিনের মতো শোরুম ও কারখানা খুলে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। শুক্রবার জুম্মার দিন হওয়াতে নামাজ ও খাওয়ার জন্য শোরুম ও কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকরা বাড়ি চলে যান। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে কারখানা থেকে ধোয়া বের হতে শুরু করে। এরপর বিকট শব্দ হয়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কারখানা ও শোরুমে।
স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে যশোর ফায়ার স্টেশন ও যশোর ক্যান্টনমেন্টস্থ শানতলা ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিটের পাঁচটি গাড়ি আধা ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় শোরুমে আগুন নিভাতে যেয়ে এক শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তারা।
মনজু বেডিংয়ের স্বত্বাধিকারীদের একজন সোহেল রানা বলেন, ‘বেলা ১২ টা পর্যন্ত সব স্বাভাবিক ছিলো। শুক্রবার বলে বাসায় চলে যাই। সাড়ে ১২ টার দিকে আমার কাছে খবর আসে, দোকানে আগুন লেগে সব পুড়ে যাচ্ছে। এসে দেখি সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তিনি বলেন, কাপড়, বেডসিট, লেপ-তোষক, নারিকেলের ছোবড়া, তুলা থাকাতে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ধারণ করছি বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানান, গত চার দিন আগেও ২০ লাখ টাকার মালমাল তুলেছি। সেগুলো এখনো খুলতে পারিনি। এছাড়া বিভিন্ন উন্নতমানের সেলাইমেশিন যন্ত্রাংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
একদিকে নিজের কারখানা আর শোরুমের তৈরিকৃত মালামাল আর বিভিন্ন লোকজনের অর্ডার নেয়া মালামাল পুড়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। প্রায় কোটি টাকা ক্ষতি হয়ে আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। রঙিন কাপড় আর তুলা এখন পুড়ে কালো ছাই হয়ে গেছে।’
এদিকে বেডিং কারখানা ও শোরুমে মালামাল দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনে পুড়তে থাকা মালামাল রক্ষা করতে শ্রমিক ও স্থানীয়রা প্রাণপণ টেষ্টা করেছেন। তবে রক্ষা করতে না পেরে ভস্মীভূত হওয়া দোকানের পাশেই আহাজারি করতে দেখা গেছে তাদের। এসময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। এ সময় উৎসুক জনতাকেও ভিড় করতে দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যশোরের উপ সহকারী পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা বলেন, ‘যশোরের দুটি স্টেশনের দুটি ইউনিট আধাঘন্টার টেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। টিন দিয়ে নির্মিত শোরুম আর কারখানা পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। ধারণা করছি সিগারেটের আগুন বা বিদ্যুতের সর্টসার্কিট থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ব্যবসায়ীরা কোটি টাকা মালামাল ক্ষতির কথা দাবি করছে। বিষয়টি তদন্ত রিপোর্ট করে পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।