বাংলার ভোর প্রতিবেদক
বয়োবৃদ্ধ সালেহা বেগমের লাল রংয়ের চাদর খুব পছন্দ। নিজের পছন্দের লাল রংয়ের চাদর বেছে নিয়ে খুব খুশি তিনি। একইভাবে শ্রমজীবী আব্দুল মালেকও নিজেই পছন্দ করে চাদর বেছে নিলেন। শুধু সালেহা বা আব্দুল মালেকই নন; প্রান্তিক শ্রেণির ৭০ জন নারী-পুরুষকে এভাবে পছন্দের চাদর উপহার দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা। শুক্রবার দুপুরে যশোরের খড়কিতে সংগঠন কার্যালয়ে এই শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। আইডিয়া ফ্রাইডে মিল’র ১৬৯তম সপ্তাহে প্রবীণদের মাঝে এই শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলো।
আয়োজকরা জানান, আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা প্রতি শুক্রবার আইডিয়া ফ্রাইডে মিল নামক একটি প্রকল্প পরিচালনা করে। যার মাধ্যমে প্রতি শুক্রবার জুম’আ’র পরে স্বেচ্ছাসেবকরা নিজেদের রান্না করা পোলাও-মাংস নিয়ে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায় থাকা অনাহারিদের দেয়ার উদ্দেশ্যে। নিজেরা রান্না করে, নিজেরা বিলি করে একাধারে ১৬৯টি শুক্রবার তারা পার করেছে। পাশাপাশি ৩ জানুয়ারি ২০২৫ সালের প্রথম শুক্রবার। এই শুক্রবার প্রবীণদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রান্তিক শ্রেণির ৭০ জন প্রবীণ নারী পুরুষের মাঝে চাদর বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আমেরিকান প্রবাসী দন্ত চিকিৎসক মোহাম্মদ চৌধুরী।
আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থা’র প্রতিষ্ঠাতা সহকারী অধ্যাপক মো. হামিদুল হক শাহীন বাংলার ভোরকে বলেন, ‘সেই ভালো কাজই ভালো, যা নিয়মিত করা হয়। তাই ১৬৯টি সপ্তাহ একাধারে পবিত্র জুম’আ’র দিন আইডিয়ার স্বেচ্ছাসেবকরা নিজ হাতে রান্না করে তা পৌঁছে দেয় অনাহারে অভুক্ত থাকা শ্রমজীবী, ভিক্ষুক কিংবা অসহায় সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে। প্রান্তিক এই মানুষগুলোর অনেকেই হয়তো কবে পোলাও-মাংসের স্বাদ পেয়েছে তা মনে নেই। তাদের কাছেই এই খাবার পৌঁছে দেয়া হয়। এই প্রকল্পের সাথে নানান সময়ে নানান মানুষ যুক্ত হয়েছেন। আমাদের ইচ্ছা কেয়ামত পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু থাকুক।’
আইডিয়া ফ্রাইডে মিল’র সমন্বয়ক শাহারিয়ার ইয়াসমিন মীম বাংলার ভোরকে জানান, ‘মূলত শিক্ষার্থীদের বিকল্প কর্মসংস্থান আইডিয়া পিঠা পার্কের লভ্যাংশের ৩৫% এই সমাজসেবায় ব্যয় হয়। এছাড়াও নানান সময় নানান শুভাকাক্সক্ষী তাদের সন্তানের জন্মদিন কিংবা প্রিয়জনের মিলাদের টাকা এখানে দিয়ে যুক্ত হয়ে আসছেন। শুক্রবার এই ফ্রাইডে মিলের পাশাপাশি প্রান্তিক এই মানুষগুলোর মাঝে শীতের চাদর বিতরণ করা হয়েছে।’