বাংলার ভোর প্রতিবেদক
যশোর শহরের ব্যস্ততম আরএন রোড এলাকায় আবারও পরিত্যক্ত অবস্থায় বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বিসমিল্লাহ অটোর সামনে রাস্তার পাশে দীর্ঘদিন ধরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিকআপ (ঢাকা-ন-১৯-২৫৯৪) ভ্যানের ভিতর থেকে দুইটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করা হয়। এই বোমা উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, কে বা কারা পরিকল্পিতভাবে দোকানপাটের আশপাশে বিস্ফোরক রেখে নিরীহ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন এবং পরিদর্শক (অপারেশনস) মোমিনুল হক দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। তাদের নির্দেশে উপপরিদর্শক সামছুল হক পিকআপ ভ্যানটি তল্লাশি করে সামনে চালকের আসনের নিচে বিশেষভাবে লুকিয়ে রাখা দুটি বোমা উদ্ধার করেন। বোমা দুটি পরে নিরাপত্তার স্বার্থে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর মাত্র কয়েকদিন আগে আরএন রোডের হা-মীম মোটর পার্টস নামের একটি দোকানের ভেতর থেকেও একটি বোমা উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পরপর এমন ঘটনায় পুরো ব্যবসায়ী মহলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মনে করছেন দুষ্কৃতিকারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে দোকানের ভিতর বা রাস্তার পাশে বিস্ফোরক রেখে ব্যবসায়ীদের জড়ানোর চেষ্টা করছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এটি একটি বড় ধরনের ষড়যন্ত্র, যার মাধ্যমে এলাকাকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। মোটর পার্টস ও টায়ার-টিউব ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আব্বাস আলী বলেন, “এর আগেও একটি দোকানের ভিতর বোমা রেখে আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এই ভাবে চলতে থাকলে নিরীহ ব্যবসায়ীরা কীভাবে শান্তিতে ব্যবসা করবে? এলাকায় ভয়ভীতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। আরেক ব্যবসায়ী নাবিল হোসেন বলেন, “এলাকায় প্রায় সব দোকানেই সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন আছে। পুলিশ চাইলে সহজেই ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করতে পারবে। আমরা চাই অপরাধীরা দ্রুত ধরা পড়ুক।
জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া পিকআপ ভ্যানটি তিন থেকে চার মাস আগে জাহিদ নামের এক ব্যবসায়ী পুরনো গাড়ি হিসেবে কিনে রাস্তায় রেখে দেন। তিনি গাড়িটি কাটাকাটি করে যন্ত্রাংশ বিক্রি করতেন। ব্যবসায়ীরা সন্দেহ করছেন সোমবার অথবা মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে কেউ সুযোগ বুঝে গাড়ির ভিতর বোমা রেখে যায়।
কোতোয়ালি থানা ওসি (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানিয়েছে, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। আশেপাশের দোকানপাট ও সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
